তুরস্কে ছুটি কাটাতে গিয়ে রহস্যজনকভাবে প্রাণ হারিয়েছেন বেথ মার্টিন নামে এক ব্রিটিশ নারী। এ ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দুই দেশেই। পরিবার অভিযোগ করেছে, মৃত্যুর পর ময়নাতদন্তে দেখা গেছে তার দেহে হৃদপিণ্ড নেই। এই ঘটনায় তুর্কি হাসপাতালের চিকিৎসা পদ্ধতি ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইংল্যান্ডের পোর্টসমাউথের বাসিন্দা বেথ মার্টিন তার স্বামী লুক মার্টিন এবং দুই সন্তান এলুয়িস (৮) ও টমি (৫) কে নিয়ে ২৭ এপ্রিল তুরস্কে ছুটি কাটাতে যান। বিমানে উঠার পরপরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রথমে ধারণা করা হয়, এটি খাবারে বিষক্রিয়ার ফল।
তবে তুরস্কে পৌঁছানোর কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন এবং ইস্তানবুলের মারমারা ইউনিভার্সিটি পেনডিক এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২৮ এপ্রিল তার মৃত্যু হয়। তুরস্কের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, হৃদরোগে ও বহু অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে মৃত্যু হয়েছে। তবে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।
পরবর্তীতে ব্রিটেনে মরদেহ পাঠানো হলে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা ময়নাতদন্তে চমকপ্রদ তথ্য প্রকাশ করেন—বেথ মার্টিনের দেহে হৃদপিণ্ড নেই। এই ঘটনায় নতুন করে প্রশ্ন ওঠে। স্বামী লুক মার্টিন অভিযোগ করেন, তুর্কি কর্তৃপক্ষ তাকে সন্দেহভাজন হিসেবে ধরে এনে সশস্ত্র পুলিশ দিয়ে বারবার জেরা করে। তারা ধারণা করেছিল, তিনি স্ত্রীকে বিষ খাইয়ে মেরেছেন।
পরিবারের দাবি, বেথের অ্যালার্জি থাকার বিষয়টি উপেক্ষা করে হয়তো তাকে পেনিসিলিন দেওয়া হয়েছিল, যার প্রতিক্রিয়ায় একাধিক অঙ্গ বিকল হয়ে পড়ে। তারা আরও অভিযোগ করেন, মৃত্যুর আগে বেথকে জোর করে চেপে ধরা হয়েছিল এবং অপ্রয়োজনীয়ভাবে বিভিন্ন যন্ত্র ও সূচ প্রয়োগ করা হয়।
তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা জানিয়েছে, মৃত্যুর সময় কোনো অস্ত্রোপচার হয়নি এবং হৃদপিণ্ড অপসারণের কোনো প্রমাণ নেই। পুরো বিষয়টি এখনো তদন্তাধীন। ব্রিটিশ কোরোনারের (মৃত্যু তদন্তকারী কর্মকর্তা) মতে, পুরো রিপোর্ট ও ফরেনসিক বিশ্লেষণ শেষ হতে ছয় মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।