বাংলাদেশে প্রতি পাঁচ জনে একজন ব্যক্তি খাদ্যজনিত অসুস্থতায় ভোগেন, অর্থাৎ দেশের প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ অনিরাপদ খাদ্যের কারণে অসুস্থ হন। অথচ উন্নত বিশ্বে এ হার মাত্র ১০ শতাংশ। আরও উদ্বেগজনক তথ্য হলো—দেশে ৪৭.৪ শতাংশ অকাল মৃত্যুর পেছনে দায়ী অনিরাপদ খাদ্য।
রোববার (২৫ মে) রাজশাহী পিটিআই-এর সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত “বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প”-এর আওতায় বিভাগীয় পর্যায়ে আয়োজিত এক জনসচেতনতামূলক কর্মশালায় এ তথ্য জানানো হয়। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জাকারিয়া এবং প্রধান অতিথি ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আরএমপি’র কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য আ.ন.ম. নাজিম উদ্দীন এবং রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার।
অনুষ্ঠানে ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের অতিরিক্ত পরিচালক অমিতাভ মণ্ডল। তিনি বলেন, জনগণের অসচেতনতা যেমন বাইরের অনিরাপদ খাবার গ্রহণে ভূমিকা রাখছে, তেমনি নিজেরাও নিজেদের খাদ্যকে অনিরাপদ করে তুলছি। সচেতনতার অভাব অনিরাপদ খাদ্য ব্যবহারের বড় কারণ। তাই গণসচেতনতা বাড়ানো জরুরি।
কর্মশালায় আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যকর অভ্যাসের ওপর জোর দেওয়া হয়। যেমন: পোড়া তেল ব্যবহার না করা, রান্নার চার ঘণ্টার মধ্যে খাবার ফ্রিজে রাখা বা গরম রাখা, পশু জবাইয়ের চার ঘণ্টার মধ্যে মাংস সংগ্রহ, খোলা তেল পরিহার, পালিশ করা চাল না খাওয়া এবং ফ্রিজের সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখা। পাশাপাশি প্লাস্টিকের বোতল পুনরায় ব্যবহার না করা, কাঁচা ও রান্না করা খাবার আলাদা ট্রেতে সংরক্ষণ, পোড়া মাংস না খাওয়া, পুরাতন পত্রিকায় খাবার না রাখা এবং ওয়ান টাইম প্লাস্টিক কাপে চা বা গরম পানীয় না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
এ ছাড়া মোড়কজাত খাবার কেনার সময় প্রস্তুত ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ দেখে নেওয়ার গুরুত্বও তুলে ধরা হয়। কর্মশালায় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, হোটেল-রেস্তোরাঁর মালিক, স্ট্রিট ফুড বিক্রেতাসহ সংশ্লিষ্টরা অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন নিরাপদ খাদ্য অফিসার মো. ইয়ামিন হোসেন।