বাংলাদেশ ধান চাষে একটি নতুন যুগে প্রবেশ করছে। জলবায়ু সহনশীল, কম কার্বন নির্গমনের প্রযুক্তিকে সামনে রেখে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), আন্তর্জাতিক কৃষি গবেষণা সংস্থা সিজিআইএআর, এবং বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন যৌথভাবে ১.৫ বিলিয়ন ডলারের একটি বৃহৎ উদ্যোগ চালু করেছে।
এই কর্মসূচির লক্ষ্য হলো ছোট কৃষকদের টেকসই, উচ্চ ফলনশীল ধান চাষে সহায়তা প্রদান করা। ক্রমবর্ধমান চরম আবহাওয়া, খরার আশঙ্কা এবং পানির সংকটের মধ্যে এই উদ্যোগ খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, উৎপাদনশীলতা বাড়ানো এবং গ্রামীণ জীবিকা উন্নয়নে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
নতুন গঠিত ADB-CGIAR ক্লিয়ারিংহাউস এর মাধ্যমে এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত থাকবে—
- কম নির্গমন প্রযুক্তি
- কার্যকর পানি ব্যবহার
- অন্তর্ভুক্তিমূলক ভ্যালু চেইন
- পুষ্টি উন্নয়ন
এই পদক্ষেপটি এডিবির বৃহত্তর ৪০ বিলিয়ন ডলারের খাদ্য ব্যবস্থা সংস্কার পরিকল্পনার অংশ, যা ২০৩০ সালের মধ্যে সমগ্র এশিয়া জুড়ে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের পাশাপাশি প্রাথমিক পর্যায়ে কেম্বোডিয়া, চীন, পাকিস্তান এবং ফিলিপাইনও এই উদ্যোগের আওতাভুক্ত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের বিনিয়োগ বাংলাদেশের জন্য শুধু কৃষিখাতে নয়, সার্বিক অর্থনীতিতেও একটি দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলবে। জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি মোকাবিলায় এটি একটি ‘গেম চেঞ্জার’ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এডিবি প্রেসিডেন্ট মাসাতসুগু আসাকাওয়া বলেন, “বাংলাদেশের কৃষি খাত এখন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। এই বিনিয়োগ শুধু টেকসই চাষ নয়, বরং কৃষকদের জন্য একটি ভবিষ্যতনির্ভর দৃষ্টিভঙ্গি উপহার দেবে।”
বাংলাদেশ সরকারও এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে এবং স্থানীয় পর্যায়ে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি হস্তান্তরের বিষয়টি অগ্রাধিকার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের ধান চাষে এক ঐতিহাসিক মাইলফলক হয়ে থাকবে।