বরিশাল বিভাগে ডেঙ্গুর প্রকোপ দিন দিন বাড়ছে। আক্রান্তের পাশাপাশি বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল বিভাগের দুটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ছয়টি সদর হাসপাতাল ও বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নতুন করে ১২৪ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন বলে জানিয়েছে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর।
একই সময়ের মধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন তিনজন। তাদের মধ্যে পিরোজপুরের নেছারাবাদ এলাকার ২০ বছর বয়সী ইসরাত জাহান শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। অন্যদিকে বরগুনা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ৭৫ বছর বয়সী চাঁন মিয়া এবং ৮৫ বছর বয়সী গোশাই দাস।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৪৮৬ জন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৩২৪ জন এবং মারা গেছেন মোট সাতজন। এর মধ্যে বরগুনা জেলায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি; এখানে মোট আক্রান্ত ১,৩৫৪ জন এবং মৃতদের মধ্যে পাঁচজনই বরগুনার বাসিন্দা।
এ বিষয়ে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল দৈনিক কালবেলা-কে জানান, বর্ষা আসলেই ডেঙ্গু আতঙ্ক বাড়ে, কারণ জলাবদ্ধতার কারণে মশার বিস্তার ঘটে। তবে এবার বৃষ্টিবিহীন সময়েও ডেঙ্গুর প্রভাব দেখা যাচ্ছে, যার পেছনে অন্যতম কারণ জনসাধারণের অসচেতনতা।
তিনি বলেন, সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের সংখ্যা আমাদের জানা থাকলেও প্রকৃত চিত্র আরও ভয়াবহ। কারণ, অনেক রোগী বেসরকারি ক্লিনিক, হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন কিংবা বাসাতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন, যাদের তথ্য আমাদের কাছে নেই।
ডা. মণ্ডল আরও বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রস্তুত রয়েছে, তবে সচেতনতা ছাড়া এটি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। মশার বংশ বিস্তার রোধে আশপাশের পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। তিনি সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সচেতন হয়ে ডেঙ্গু প্রতিরোধে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।