প্যারিস সাঁ-জার্মেন (পিএসজি) অবশেষে ইউরোপ সেরার মুকুট জয় করেছে। চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে তারা ৫-০ গোলের দুর্ধর্ষ জয়ে উড়িয়ে দিয়েছে ইতালিয়ান জায়ান্ট ইন্টার মিলানকে। ইউরোপিয়ান ফুটবলের এই রাত ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে একাধিক রেকর্ডের মাধ্যমে।
এই জয়ের মাধ্যমে চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি (১৬৮টি) ম্যাচ খেলে প্রথমবার শিরোপা জয়ের রেকর্ড গড়েছে পিএসজি। ফাইনালে দলের পক্ষে গোল করেছেন দুই টিনএজার—মাইয়ুলু ও দেজিরে দুয়ে, উভয়ের বয়সই ১৯। ইউরোপিয়ান কাপের ফাইনালে এই প্রথম একাধিক কিশোর খেলোয়াড় গোল করলেন।
মৌসুমের ঘরোয়া লিগ ও কাপ জয়ের পর চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতে ট্রেবল পূর্ণ করেছে পিএসজি। তারা ইউরোপের নবম এবং ফ্রান্সের প্রথম ক্লাব হিসেবে এই কীর্তি অর্জন করেছে। ১৯৯৩ সালে মার্শেইয়ের পর দ্বিতীয় ফরাসি ক্লাব হিসেবে চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছে তারা। পিএসজি কোচ লুইস এনরিকে দ্বিতীয়বারের মতো ইউরোপিয়ান ক্লাবের হয়ে ট্রেবল জয় করলেন। এর আগে তিনি ২০১৪-১৫ মৌসুমে বার্সেলোনাকে এই কৃতিত্ব এনে দিয়েছিলেন। এনরিকে ও গার্দিওলা ছাড়া আর কেউ এই কীর্তি গড়তে পারেননি।
ইন্টার মিলানকে ৫-০ ব্যবধানে হারানো চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জয়। এর আগে কখনও কোন দল এত বড় ব্যবধানে জয় পায়নি। দেজিরে দুয়ে ছিলেন ম্যাচের নায়ক—প্রথম গোলের অ্যাসিস্ট করার পাশাপাশি নিজে করেছেন দুটি গোল। চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে প্রথম তিন গোলেই অবদান রাখার একক রেকর্ড এখন তাঁর দখলে।
এই ম্যাচে ৫ গোল হজম করে ইন্টার মিলান হয়েছে ইতিহাসে প্রথম দল, যারা ইউরোপিয়ান কাপ বা চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে এত গোল খেয়েছে। শেষবার এমন কিছু ঘটেছিল ১৯৬২ সালে, যখন বেনফিকা ৫-৩ গোলে হারিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদকে।
ইন্টার মিলান আরও একটি রেকর্ড গড়েছে, প্রথম ক্লাব হিসেবে ফাইনালের শুরুর একাদশে ৩৫ বছর বা তার বেশি বয়সী তিন খেলোয়াড় খেলিয়েছে—ইয়ান সমার, ফ্রানচেস্কো অ্যাকারবি ও হেনরিখ মেখিতারিয়ান।
দেজিরে দুয়ে হয়েছেন চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে অ্যাসিস্ট করা সবচেয়ে কম বয়সী ফুটবলার (১৯ বছর ৩৬২ দিন)। এই কীর্তিতে তিনি পেছনে ফেলেছেন জুড বেলিংহামকে, যিনি গত বছরের ফাইনালে ২০ বছর ৩৩৮ দিনে এই রেকর্ড করেছিলেন।
অন্যদিকে, আশরাফ হাকিমির এবারের মৌসুমে ৯টি গোল অবদানে (৪ গোল, ৫ অ্যাসিস্ট) চ্যাম্পিয়নস লিগে কোনো ডিফেন্ডারের সর্বোচ্চ যৌথ অবদান রাখার রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন। এর আগে ২০০০-০১ মৌসুমে ইয়ান হার্ট একই সংখ্যক অবদান রেখেছিলেন। তাছাড়া, হাকিমি ইউরোপিয়ান কাপ ফাইনালে নিজের সাবেক ক্লাব ইন্টার মিলানের বিপক্ষে গোল করা প্রথম খেলোয়াড় হিসেবেও ইতিহাসে নাম লিখিয়েছেন।