বাংলাদেশিদের আয়োজনে উত্তর টেক্সাসের ফ্রিসকোতে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল আমেরিকার অন্যতম বৃহৎ বৈশাখী মেলা ২০২৫। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ নর্থ টেক্সাস (BANT) আয়োজিত এ আয়োজনটি গত ৩১ মে শনিবার ফ্রিসকো ফ্লায়ার্স মাঠে , টয়োটা স্টেডিয়ামের ঠিক বিপরীতে অনুষ্ঠিত হয় । দুপুর ২টা থেকে শুরু হয়ে মধ্যরাত পর্যন্ত চলে প্রাণবন্ত এই উৎসব।
বৈশাখী সাজে সেজে হাজারো প্রবাসী ও স্থানীয় দর্শনার্থী ভিড় জমিয়েছিলেন মেলা প্রাঙ্গণে। বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পোশাক, পিঠা-পুলিসহ দেশীয় খাবার, ফ্যাশন প্যাভিলিয়ন, রঙিন ফটোবুথ এবং সৃজনশীল হস্তশিল্পে ভরপুর ছিল পুরো আয়োজন। শিশুদের জন্য ছিল আলাদা কর্নার, মুখরোচক খাবার ও নানা রকম বিনোদনের ব্যবস্থা।
মেলার মূল মঞ্চে সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত পর্যন্ত চলেছে জমকালো পারফর্ম্যান্স। দর্শকদের মাতিয়ে রেখেছেন জনপ্রিয় বাংলাদেশি শিল্পী প্রীতম হাসান, যার পরিবেশনা ছিল রাতের প্রধান আকর্ষণ। তার পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন প্রতিক হাসান, সৈয়দ নিশাত মনসুর ও চিত্রনায়ক জায়েদ খানসহ একাধিক তারকা এবং স্থানীয় শিল্পীরা। বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পরিবেশনায় ফুটে উঠেছে বাংলাদেশের গানের, নাচের এবং নাটকের বৈচিত্র্য।
বিভিন্ন স্টল ও বুথে প্রবাসীরা যেমন নিজেদের সংস্কৃতি তুলে ধরেছেন, তেমনি যুক্তরাষ্ট্রে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মও পেয়েছে নিজেদের শেকড়কে ছুঁয়ে দেখার এক অসাধারণ সুযোগ। দেশীয় স্বাদের খাবার, পিঠার গন্ধ আর বৈশাখী গান-বাজনা মুহূর্তে ফিরিয়ে নিয়েছিল দর্শনার্থীদের ফেলে আসা বাংলায়।
অনুষ্ঠানের আয়োজক BANT সভাপতি বলেন, “প্রবাসে থেকেও বৈশাখ আমাদের আত্মার উৎসব। এই উৎসব শুধু বাঙালিদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়—আমরা চাই এটি হয়ে উঠুক উত্তর টেক্সাসের সবার জন্য একটি সাংস্কৃতিক মিলনমেলা।”
অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা ও পার্কিং ব্যবস্থাও ছিল যথাযথ। আগেই অনলাইনে ও নির্ধারিত লোকেশন থেকে টিকিট সংগ্রহের মাধ্যমে প্রবেশ নিশ্চিত করায় ভিড় হলেও ছিল শৃঙ্খলাপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশ।
BANT ২০২৪-২৬ নির্বাহী কমিটি ও river-এর সমন্বয়ে পরিচালিত এ অনুষ্ঠানটির মাধ্যমে আবারও প্রমাণ হলো, বিদেশে থেকেও প্রবাসীরা ভুলে যাননি তাদের সংস্কৃতি, পরিচয় ও আনন্দ ভাগাভাগির ঐতিহ্য।
বৈশাখের রঙ আর বাংলার সুরে গাঁথা এই মেলাটি নিঃসন্দেহে প্রবাসে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের জন্য ছিল একদিনের ‘বাংলা’ ফিরে পাওয়া। স্থানীয় বাসিন্দারাও উপভোগ করেছেন এই ব্যতিক্রমী অভিজ্ঞতা, যা আগামী বছরগুলোতেও তাদের আগ্রহ আরও বাড়াবে বলে আয়োজকেরা আশা প্রকাশ করেছেন।