ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার কুটি ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামের মো. মফিজুল ইসলাম এখন সবার কাছে ‘পাখি মফিজ’ নামেই পরিচিত। এক সময় বিদেশে গিয়ে সফলতার দেখা না পেলেও, দেশে ফিরে নিজের শখ এবং ভালোবাসাকে পুঁজি করে গড়ে তুলেছেন একটি সফল পাখির খামার। আর আজ তিনি একজন স্বনির্ভর কোটিপতি উদ্যোক্তা, যার গল্প এখন এলাকার মানুষজনের জন্য এক বাস্তব অনুপ্রেরণা।
ছোটবেলা থেকেই পাখির প্রতি অগাধ ভালোবাসা ছিল মফিজুলের। কয়েক বছর আগে মাত্র দুটি টিয়া পাখি দিয়ে শুরু করেছিলেন খামার। কঠোর পরিশ্রম, ধৈর্য আর নিষ্ঠার ফলে ধীরে ধীরে খামারের পরিসর বড় হতে থাকে। বর্তমানে তার খামারে ৪৫০টিরও বেশি টিয়া ও ময়না রয়েছে, যাদের সৌন্দর্য ও কথা বলার দক্ষতা দেশজুড়ে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করছে।
এই পাখিগুলোর জন্য দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা আসেন। প্রতি মাসে তার আয় এক থেকে দেড় লাখ টাকা, যা মাঝে মাঝে আরও বেশি হয়। মফিজুলের এই অভাবনীয় সাফল্য কসবা অঞ্চলের তরুণদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ সৃষ্টি করেছে।
স্থানীয় স্কুলশিক্ষক মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, “মফিজুল আমাদের কসবার গর্ব। তিনি প্রমাণ করেছেন—ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়।” পাশের গ্রামের যুবক আব্দুর রহিম বলেন, “আমি তার খামারে কাজ শিখে এখন নিজেই পাখি পালন শুরু করেছি। তিনি আমার পথপ্রদর্শক।” ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. এলিম মিয়া জানান, “মফিজ এখন আমাদের ইউনিয়নের জন্য একটি উজ্জ্বল উদাহরণ। প্রশাসনের উচিত এমন উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা বাড়ানো।”
কসবা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. তারেক মাহমুদ জানান, “মফিজুল ইসলাম একজন অসাধারণ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা। তার খামারটি আমাদের নিয়মিত তত্ত্বাবধানে রয়েছে। তিনি স্বাস্থ্যবিধি মেনে সঠিকভাবে পাখি লালন-পালন করছেন। আমরা তার খামারকে আরও বিস্তৃত করার জন্য কারিগরি সহায়তা ও প্রশিক্ষণ দিতে প্রস্তুত।”
মফিজুলের এই সাফল্য প্রমাণ করে, শখ এবং চেষ্টা থাকলে সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে তা লাভজনক পেশায় রূপান্তর করা সম্ভব।