গ্রীষ্মের মৌসুমে পাওয়া সুস্বাদু ফলগুলোর মধ্যে কালো জাম অন্যতম। দেখতে রসে টসটসে বেগুনি রঙের এ ফল খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনি পুষ্টিগুণেও ভরপুর। বাজারে এই ফলটি পাওয়া যায় বিভিন্ন নামে—ব্ল্যাক প্লাম, জাম্বুল, মালাবার প্লাম, কালা জামুন, নাভাল, জাভা প্লাম ইত্যাদি। শুধু স্বাদ নয়, স্বাস্থ্য রক্ষায় জামের রয়েছে অসাধারণ ভূমিকা।
পুষ্টিমানে ভরপুর কালো জাম
প্রতি ১০০ গ্রাম জামে থাকে ক্যালরি ৬২, কার্বোহাইড্রেট ১৫.৫ গ্রাম, ফাইবার ১.৫ গ্রাম, ভিটামিন সি ১৮ মিলিগ্রাম, আয়রন ১.৪১ মিলিগ্রাম এবং পটাসিয়াম ৫৫ মিলিগ্রাম। এই উপাদানগুলো শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
হিমোগ্লোবিন বাড়ায়, রক্ত পরিষ্কার রাখে
আয়রনের ভালো উৎস হওয়ায় কালো জাম হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করে, ফলে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ে এবং শরীর চাঙ্গা থাকে। একই সঙ্গে এটি রক্ত পরিশুদ্ধ করতে ভূমিকা রাখে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কার্যকর
কালো জামে রয়েছে কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। জামের বীজ, ছাল ও পাতা ডায়াবেটিসের চিকিৎসায়ও ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
হৃদ্রোগ প্রতিরোধ ও পেশির যত্ন
পটাশিয়াম সমৃদ্ধ হওয়ায় জাম হৃদ্যন্ত্র সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। এটি উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। ধমনিগুলোকেও সুস্থ রাখে, ফলে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে।
ত্বক ও দাঁতের যত্নে জামের ব্যবহার
জাম ত্বককে অয়েল ফ্রি রাখতে সাহায্য করে এবং অ্যাকনে ও কালো দাগ দূর করে। এছাড়া, জামগাছের পাতা শুকিয়ে গুঁড়ো করে টুথপাউডার হিসেবে ব্যবহার করলে মাড়ির রক্তপাত ও সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকর
জামে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিফাঙ্গাল ও অ্যান্টিম্যালেরিয়াল গুণাবলি। এতে ম্যালিক অ্যাসিড, ট্যানিন, গ্যালিক অ্যাসিড, অক্সালিক অ্যাসিড এবং বেটুলিক অ্যাসিড রয়েছে, যা শরীরকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
হজম ও অ্যাসিডিটির সমস্যা কমায়
কালো জাম হজমশক্তি বাড়ায়, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং বদহজম রোধে সাহায্য করে। একইসাথে, যাদের অম্বলের সমস্যা আছে, তাদের জন্যও এটি খুবই উপকারী।
নিয়মিত খাওয়ার পরামর্শ
পুষ্টিবিদরা মনে করেন, মৌসুমে নিয়মিত জামের মতো ফল খাওয়া শরীরের সামগ্রিক সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অতএব, জাম শুধু স্বাদের নয়, এটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্যও এক মূল্যবান সম্পদ।