ফায়ারফ্লাই অ্যারোস্পেস এর ব্লু ঘোস্ট মিশন ১, যার আরেক নাম ঘোস্ট রাইডার্স ইন দা স্কাই, প্রথমবার চাঁদে সম্পূর্ণ সফল বাণিজ্যিক অবতরণ সম্পন্ন করেছে। এই মহাকাশযানটি ১৫ জানুয়ারি,২০২৫ এ উৎক্ষেপণ করা হয় এবং ২ মার্চ,২০২৫ সফলভাবে চাঁদের পৃষ্ঠে অবতরণ করে।
এটি ১৪ দিনেরও বেশি সময় (৩৪৬ ঘণ্টা দিবালোক) চন্দ্রপৃষ্ঠে বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও প্রযুক্তিগত পরীক্ষা পরিচালনা করে এবং চন্দ্ররাত্রিতে ৫ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে কার্যক্রম চালায়। এই মিশন চলাকালে ব্লু ঘোস্ট প্রায় ১১৯ গিগাবাইট তথ্য পৃথিবীতে প্রেরণ করে। এর মধ্যে নাসার ৫১ গিগাবাইট ছিল নাসার প্লে-লোড থেকে সংগৃহীত বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত তথ্য।
মিশনের উদ্দেশ্য ছিল চাঁদের অভ্যন্তর থেকে তাপ প্রবাহ, প্লুম-সারফেস ইন্টারঅ্যাকশন এবং ক্রাস্টাল বৈদ্যুতিক এবং চৌম্বক ক্ষেত্রগুলি তদন্ত করা। এটি পৃথিবীর চুম্বকীয় মণ্ডলের এক্স-রে চিত্রও তুলেছিল, যা ভবিষ্যৎ মহাকাশ অনুসন্ধানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেছে।
মিশনে বেশ কিছু প্রযুক্তিগত পরীক্ষা অন্তর্ভুক্ত ছিল, যেমন রেগোলিথ নমুনা সংগ্রহ, রেগোলিথ সংযুক্তি, এবং রেডিয়েশন-সহনশীল কম্পিউটিং। এছাড়াও গ্লোবাল ন্যাভিগেশন স্যাটেলাইট সিস্টেম (GNSS) সক্ষমতা এবং ইলেকট্রোডাইনামিক ক্ষেত্রগুলো ব্যবহার করে ধুলো কমানোর কৌশল পরীক্ষিত হয়েছে। এই উদ্ভাবনগুলো চন্দ্র অনুসন্ধানের দীর্ঘমেয়াদী টেকসইতা নিশ্চিত করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মহাকাশযানটি চাঁদের সূর্যাস্তের উচ্চ-রেজোলিউশনের ছবি ধারণ করে, যা লুনার হরাইজন গ্লো নামক রহস্যময় ঘটনার উপর আলোকপাত করতে পারে।প্রথমবারের মতো, ব্লু ঘোস্ট চাঁদে পৃথিবীর ন্যাভিগেশন সিস্টেম যেমন জিপিএস এবং গ্যালিলিওর সংকেত গ্রহণ করে, যা ভবিষ্যতে চন্দ্র ও মহাকাশ অনুসন্ধানে সহায়ক হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মিশন ভবিষ্যতে নাসার আর্টেমিস প্রোগ্রাম এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক চন্দ্র অভিযানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ফায়ারফ্লাই অ্যারোস্পেস এর এই অর্জন বেসরকারি মহাকাশ গবেষণা সম্ভাবনাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
ফয়ারফ্লাই অ্যারোস্পেস এর এই অর্জন এখন পর্যন্ত দীর্ঘতম বাণিজ্যিক অভিযান হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে। এটি বাণিজ্যিক অনুসন্ধানের জন্য নতুন যুগের দ্বার উন্মোচন করেছে।