রান্নাঘরের ছোট্ট মসলা এলাচকে আমরা অনেক সময় শুধু স্বাদ বা গন্ধের জন্য ব্যবহার করি। অথচ এই ছোট্ট মসলার ভেতরেই লুকিয়ে আছে অসাধারণ অনেক উপকারিতা। কেউ এলাচ খান মুখশুদ্ধি হিসেবে, আবার কারও কাছে এর তীব্র গন্ধ পছন্দনীয় নয়। কিন্তু জানলে অবাক হবেন—খালি পেটে প্রতিদিন মাত্র একটি এলাচ খেলেই মিলতে পারে শরীর ও মনের নানা সমস্যার সহজ সমাধান। এ কারণেই একে বলা হয় “মসলার মধ্যে ওষুধ”।
এলাচ হজম ও অ্যাসিডিটির সমস্যা দূর করে, বুক জ্বালা, গ্যাস্ট্রিক বা বমিভাব কমায় এবং বিপাকক্রিয়া ঠিক রাখে। সকালে খালি পেটে এলাচ ভেজানো পানি খেলে শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বের হয়ে যায়, ত্বক হয় উজ্জ্বল ও টানটান, বলিরেখা ও বয়সের ছাপও কমে। শ্বাসকষ্ট, কাশি কিংবা ফুসফুসের সংক্রমণ কমাতে মধু, লেবুর রস ও গরম পানিতে এলাচ মিশিয়ে পান করা কার্যকর।
হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও এলাচের ভূমিকা রয়েছে। এটি রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখে, হৃদস্পন্দন নিয়ন্ত্রণ করে এবং রক্ত চলাচল সুষ্ঠু করে। দাঁত-মাড়ির সমস্যা ও মুখের দুর্গন্ধ দূর করতেও এলাচ বেশ উপকারী। গবেষণায় দেখা গেছে, এলাচ ক্যানসার প্রতিরোধেও সহায়তা করে, কারণ এটি ক্যানসারের কোষ গঠনে বাধা দেয়।
পেশির টান বা ব্যথা কমাতে গরম পানিতে এলাচ ফুটিয়ে খেলে আরাম পাওয়া যায়। আবার এলাচ দিয়ে বানানো চা মাথাব্যথা ও মানসিক চাপ কমাতে কার্যকর। ঠান্ডা-কাশির সময়ও এলাচ ভালো কাজ করে, কারণ এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এসব সমস্যা দ্রুত কমায়। সবচেয়ে বড় কথা, এলাচের মনোমুগ্ধকর সুগন্ধ মানসিক প্রশান্তি এনে দেয়, নার্ভ রিল্যাক্স করে ও হালকা অবসাদ দূর করতে সাহায্য করে।
কীভাবে খাবেন?
সকালে খালি পেটে ১টি এলাচ চিবিয়ে খান।
রাতে ১টি এলাচ পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই পানি পান করুন।
চাইলে এলাচ দিয়ে বিশেষ ‘এলাচ চা’ বানিয়েও পান করতে পারেন।
ছোট দেখতে হলেও এলাচের উপকারিতা সত্যিই অনেক বড়। তাই খাবারের স্বাদের বাইরে গিয়ে প্রতিদিনের স্বাস্থ্যচর্চায় এই প্রাকৃতিক উপাদানটিকে যুক্ত করতে ভুলবেন না।