আহমেদাবাদের মেঘানিনগরে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানের ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (১৩ জুন) চিকিৎসকদের একটি হোস্টেলের ছাদ থেকে ব্ল্যাক বক্সটি পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রকের একটি সূত্র।
ব্ল্যাক বক্সের মধ্যে বিমানের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংরক্ষিত থাকে, যা বিশ্লেষণ করে দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানা সম্ভব হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সাধারণত প্রতিটি বিমানে দুটি ব্ল্যাক বক্স থাকে—একটি ডিজিটাল ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার (DFDR) এবং অন্যটি ককপিট ভয়েস রেকর্ডার (CVR)। DFDR বিমানের প্রযুক্তিগত তথ্য ধারণ করে, যেমন গতি, উচ্চতা, ইঞ্জিনের অবস্থা ইত্যাদি। অন্যদিকে, CVR ককপিটে পাইলটদের কথোপকথন ও এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে যোগাযোগ সংরক্ষণ করে, যা বিপদের মুহূর্তে কী ঘটেছিল তা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হয়ে দাঁড়ায়।
ব্ল্যাক বক্স নাম হলেও এর গায়ের রঙ গাঢ় কমলা। এটি স্টিল ও টাইটেনিয়াম দিয়ে তৈরি হওয়ায় পানি, আগুন বা ভয়াবহ ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতিতেও বছরের পর বছর অক্ষত থাকে।
আহমেদাবাদের ভয়াবহ দুর্ঘটনার তদন্ত করছে এয়ারক্র্যাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (AAIB)। এই সংস্থার তদন্তকারী দল এবং গুজরাট সরকারের প্রায় ৪০ জন কর্মকর্তার যৌথ প্রচেষ্টায় ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে ব্ল্যাক বক্সটি উদ্ধার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা ৩৮ মিনিটে আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনের গ্যাটউইকগামী বিমানটি উড়েছিল। কিন্তু ওড়ার মাত্র পাঁচ মিনিট পরই এটি মেঘানিনগরের একটি আবাসিক এলাকায় ভেঙে পড়ে। বিমানটিতে থাকা ২৪২ জন যাত্রীর মধ্যে ২৪১ জনই নিহত হন। বেঁচে যান শুধু একজন—বিশ্বাস কুমার রমেশ, যিনি একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক।
এ দুর্ঘটনায় বিমানের বাইরে আরও ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। মেঘানিনগরের চিকিৎসকদের হোস্টেলে বিমানটি ভেঙে পড়ায় সেখানে আরও পাঁচজন নিহত হয়েছেন এবং অন্তত ৬০ জন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। আহতদের দেখতে শুক্রবার হাসপাতালে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।