আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করলেন এশিয়ার একটি দেশের প্রধানমন্ত্রী। মঙ্গলবার (৩ জুন) পার্লামেন্টে আনা আস্থা ভোটে হেরে মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রী লুভসান্নামস্রাইন ওয়ুন-এর্দেনে পদত্যাগ করেছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।
তার ছেলের বিলাসবহুল জীবনযাত্রা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র বিতর্কের পর দেশজুড়ে দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা যায়, ওয়ুন-এর্দেনের ছেলে এবং তার বান্ধবী বাগদানের ছুটিতে একাধিক বিলাসী ব্র্যান্ডের শপিং ব্যাগ ও একটি কালো ডিওর শোল্ডার ব্যাগ প্রদর্শন করছেন। এক ছবিতে তাদের সুইমিংপুলে চুম্বনরত অবস্থাতেও দেখা যায়। বান্ধবীর একটি ছবির ক্যাপশনে লেখা ছিল, “জন্মদিনের শুভেচ্ছা আমাকে।”
এই ঘটনাগুলো ঘিরে মঙ্গোলিয়াজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে, বিশেষ করে রাজধানী উলানবাটারে তরুণদের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো। আন্দোলনকারীরা প্রশ্ন তুলেছেন, প্রধানমন্ত্রী পরিবার কীভাবে এত বিলাসী জীবনযাপন করেন? এ নিয়ে দেশটির দুর্নীতি দমন সংস্থা তদন্ত শুরু করেছে।
আস্থা ভোটে ৮৮ সদস্যের মধ্যে ওয়ুন-এর্দেনের পক্ষে ভোট দেন ৪৪ জন, বিপক্ষে ভোট দেন ৩৮ জন। কিন্তু পার্লামেন্টে আস্থা টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন ছিল অন্তত ৬৪ জন সদস্যের সমর্থন। ফলাফল ঘোষণার পর তিনি বলেন, “মহামারি, যুদ্ধ এবং শুল্কের মতো কঠিন সময়ে আমার দেশ ও জনগণের সেবা করা ছিল আমার জন্য সম্মানের।”
তবে ওয়ুন-এর্দেনে দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, সমালোচকরা তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। অন্যদিকে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, তার নেতৃত্বে মঙ্গোলিয়ায় দুর্নীতির পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। ২০২৩ সালে সরকারি স্বচ্ছতার দিক থেকে ১৮০টি দেশের মধ্যে মঙ্গোলিয়ার অবস্থান ছিল ১১৪তম।
উল্লেখ্য, রাশিয়া ও চীনের মাঝে অবস্থিত মঙ্গোলিয়া ১৯৯০-এর দশকের গোড়ায় সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর গণতন্ত্রে রূপান্তরিত হয়। কিন্তু দুর্নীতি সেখানে দীর্ঘদিন ধরেই একটি স্থায়ী সমস্যা। এর আগেও দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী সুখবাটার বাটবোল্ডের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে, যেখানে তাকে নিউইয়র্কে খনির অর্থ চুরি করে অ্যাপার্টমেন্ট কেনার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়, যদিও তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন।