চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে অনলাইন জুয়ার বিস্তার আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। সহজে প্রচুর অর্থ উপার্জনের লোভে পড়ে বিভিন্ন বয়সের মানুষ, বিশেষ করে শিক্ষার্থী ও তরুণরা এ জুয়ায় আসক্ত হয়ে পড়ছে। প্রথমদিকে সামান্য লাভ পেলেও পরে নেশার মতো আসক্ত হয়ে হাজার হাজার টাকা খুইয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন অনেকেই। এর ফলে পরিবারে অশান্তি, দাম্পত্য কলহ ও সামাজিক সংকট বেড়েই চলেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রায় ১০ থেকে ১২ ধরনের অ্যাপসে সবচেয়ে বেশি জুয়া খেলা হয়। এসব অ্যাপস পরিচালিত হচ্ছে মূলত রাশিয়া, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া থেকে। বাংলাদেশে রয়েছে এজেন্ট নেটওয়ার্ক, যারা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করে এবং বিদেশে পাচার করে দেয়।
এক কলেজ শিক্ষার্থী জানান, তিনি প্রথমে মাত্র ৩৬ টাকা বিনিয়োগ করে ৩ হাজার টাকা পান। এরপর লোভে পড়ে জুয়ায় আসক্ত হয়ে পড়েন। গত ছয় মাসে বাবার দেওয়া মোটরসাইকেল পর্যন্ত বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন। অন্যদিকে এক অটোরিকশাচালক বলেন, অংশগ্রহণকারীদের প্রথমে জিতিয়ে প্রলুব্ধ করা হয়। পরে আসক্ত হয়ে গেলে একের পর এক টাকা হারাতে থাকে, তখন আর বের হওয়ার পথ থাকে না।
স্থানীয় এক গৃহবধূ জানান, তার স্বামী অনলাইন জুয়ার কারণে ঘরের জিনিসপত্র বিক্রি করতেন। প্রতিবাদ করলে তিনি নির্যাতনের শিকার হতেন। একপর্যায়ে পারিবারিক কলহের কারণে তাদের বিচ্ছেদ ঘটে।
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুলতানা রাজিয়া বলেন, বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে এসেছে। শিক্ষার্থী ও তরুণদের সচেতন করতে অভিভাবক ও শিক্ষকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। একইসঙ্গে জনসচেতনতা বাড়ানো গেলে অনলাইন জুয়া নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।