অতিরিক্ত কর্মঘণ্টা শুধু ক্লান্তি বাড়ায় না, মস্তিষ্কের গঠনেও উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। কোরিয়ার চুং-আং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ওয়ানহিউং লি ও তাঁর সহকর্মীরা ১১০ জন স্বাস্থ্যসেবা কর্মীর ওপর করা এমআরআই বিশ্লেষণে দেখেছেন—যাঁরা প্রতি সপ্তাহে ৫২ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন, তাঁদের মস্তিষ্কে কম কাজ করা মানুষের তুলনায় ১৭টি অঞ্চলে গঠনগত পরিবর্তন রয়েছে। এসব অঞ্চলের মধ্যে যৌক্তিক চিন্তাভাবনা ও আবেগ-নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে জড়িত নির্বাহী কার্যাবলীর কেন্দ্রগুলোও আছে।
ওকুপেশনাল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল মেডিসিন-এ প্রকাশিত গবেষণাটিকে টাইম ম্যাগাজিন ১৬ মে প্রতিবেদন হিসেবে তুলে ধরে। সেখানে লি বলেন, দীর্ঘস্থায়ী পেশাগত চাপের ফলে মস্তিষ্ক “নিউরোঅ্যাডাপ্টিভ” উপায়ে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে পারে—কিছু এলাকায় আয়তন বেড়ে যাওয়া তার ইঙ্গিত। যদিও বাড়তি আয়তন দেখে প্রথমে বিস্মিত হয়েছিলেন, তিনি মনে করেন এটি মস্তিষ্কের প্রতিরক্ষামূলক অভিযোজনের সম্ভাব্য চিহ্ন, যার পেছনে মানসিক চাপ ও উদ্বেগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
লির মতে, উন্নত ইমেজিং প্রযুক্তির কারণে এখন খুব ছোট মাপের গঠনগত পরিবর্তনও ধরা সম্ভব, যা অতিরিক্ত কাজ বা দীর্ঘমেয়াদি স্ট্রেস-জনিত “আগে দেখা না-যাওয়া” জৈবিক ক্ষতি শনাক্তে নতুন দিগন্ত খুলেছে। এভাবে পেশাগত ও পরিবেশগত স্বাস্থ্যের গবেষণা আরও সমৃদ্ধ হচ্ছে।
দীর্ঘ সময় কাজের ফল হিসেবে ঘুমের বিঘ্ন, হৃদ্রোগ, উদ্বেগ বা বিষণ্ণতার মতো মানসিক ব্যাধির পাশাপাশি মস্তিষ্কের অন্তর্নির্মিত কাঠামোও ক্ষতির মুখে পড়তে পারে—গবেষণাটি সেই সতর্কবার্তাই আবারও জোরালো করল।