টাইব্রেকার যে কতটা নিষ্ঠুর — ভারতের অরুণাচল প্রদেশের ইউপিয়া গোল্ডেন জুবিলি স্টেডিয়ামে অনূর্ধ্ব-১৯ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালেই তা টের পেল বাংলাদেশ। স্বাগতিক ভারতের কাছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলের পরাজয়ে মোরশেদ-নাজমুলদের শিরোপা-স্বপ্ন থেমে গেল রানার্স-আপ হয়েই।
ম্যাচের প্রথম মিনিটেই সিঙ্গামায়ুম সামির দুর্দান্ত ফ্রি-কিকে গোল হজম করে পেছিয়ে পড়ে লাল-সবুজের তরুণরা, তবু হাল ছাড়েনি গোলাম রব্বানীর শিষ্যরা। ৪২ মিনিটে মিঠুর হেড পোস্টে লেগে ফিরলে ফিরতি বল জালে পাঠান রিফাত কাজী—কিন্তু বিতর্কিত ফাউলের তকমায় রেফারি সেই গোল বাতিল করেন, যা পরে সমালোচনার জন্ম দেয়।
দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া বাংলাদেশ ৬০ মিনিটে বদলি জয় আহমেদের দারুণ শটে সমতা টানে—এটাই ছিল পুরো টুর্নামেন্টে ভারতের প্রথম হজম করা গোল। টাইব্রেকারে ইসমাইল হোসেন ভারতের দ্বিতীয় শুট রোহেন সিংয়ের শট ফিরিয়ে দিয়ে আশা জাগালেও শেষ দু’টি শটে সালাহ উদ্দিন ও অধিনায়ক নাজমুল হুদা ব্যর্থ হলে স্বপ্নভঙ্গ ঘটে। ভারতের ছেলেরা উদ্দাম উল্লাসে মেতে ওঠে, আর বাংলাদেশের যুবারা অশ্রুসিক্ত চোখে মাঠেই ঢলে পড়েন।
গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে গোল বাতিল, অতিরিক্ত সময়ে খেলা বেশি চালানো—এ নিয়ে রেফারির সিদ্ধান্ত প্রশ্নের মুখে পড়েছে। ধারাভাষ্যকারেরাও স্বীকার করেছেন, সিদ্ধান্তগুলো বিতর্কের যথেষ্ট উপাদান জুগিয়েছে। তবুও মালদ্বীপের সঙ্গে ড্র, ভুটান ও নেপালকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠা বাংলাদেশ দেখিয়েছে লড়াই-স্পৃহা, শৃঙ্খলা ও প্রতিভার ঝলক। ২০২২-এর অনূর্ধ্ব-২০ সাফ চ্যাম্পিয়নরা এবার ট্রফির খুব কাছে গিয়েও পারল না শেষ হাসি হাসতে। মোরশেদ, ইসমাইল, জয়, রিফাতদের অশ্রু আজ ব্যথার; তবুও ভবিষ্যতের সম্ভাবনার বার্তা বয়ে আনে এই কান্না।