ফুটবলে বর্ণবাদবিরোধী লড়াইয়ে এক ঐতিহাসিক জয় পেল স্পেন। রিয়াল মাদ্রিদের ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের বিরুদ্ধে বর্ণবাদী আচরণের দায়ে পাঁচজনকে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত। এই রায় স্প্যানিশ ফুটবলের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বর্ণবাদী আচরণকে ‘হেট ক্রাইম’ বা বিদ্বেষমূলক অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দিল।
লা লিগা কর্তৃপক্ষ বুধবার (২১ মে) এক বিবৃতিতে জানায়, অভিযুক্ত পাঁচজনকে এক বছরের স্থগিত কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, তারা আগামী তিন বছরের মধ্যে আর কোনো অপরাধে জড়ালে তবেই এই সাজা কার্যকর হবে। সেই সঙ্গে তিন বছরের জন্য তাদের ফুটবল স্টেডিয়ামে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং প্রত্যেককে ১,০৮০ থেকে ১,৬২০ ইউরো পর্যন্ত অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে রিয়াল ভায়াদলিদের বিপক্ষে ম্যাচে, মাঠ ছাড়ার সময় ভিনিসিয়ুসকে লক্ষ্য করে বর্ণবাদী গালি দেওয়া হয় ভায়াদলিদের জোসে জোরিয়ায়া স্টেডিয়ামে। ঘটনার পর লা লিগা নিজেই মামলার সূচনা করে, পরে এতে যুক্ত হয় রিয়াল মাদ্রিদ ক্লাব, ভিনিসিয়ুস নিজে এবং স্পেনের পাবলিক প্রসিকিউটরস অফিস। লা লিগা তাদের বিবৃতিতে বলেছে, “এই রায় স্পেনে খেলাধুলার জগতে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এক নজিরবিহীন মাইলফলক। এতদিন এমন আচরণকে শুধু নৈতিকভাবে নিন্দাযোগ্য বলা হতো, এবার তা আইনি পর্যায়ে হেট ক্রাইম হিসেবে গণ্য হলো।”
ভিনিসিয়ুস এর আগেও একাধিকবার স্পেনে বর্ণবাদের শিকার হয়েছেন। ২০২৩ সালে ভ্যালেন্সিয়ার মাঠে ঘটে যাওয়া এক ঘটনায় তিনজন সমর্থককে আট মাসের কারাদণ্ড দেয় আদালত। তখন ভিনিসিয়ুস বলেছিলেন, “আমি বর্ণবাদের শিকার নই, আমি বর্ণবাদীদের আতঙ্ক।”
মাঠের পারফরম্যান্সে যেমন দুর্দান্ত, তেমনি মাঠের বাইরেও বর্ণবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের অন্যতম প্রতীক হয়ে উঠেছেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে তিনি দুবার চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছেন এবং দুটি ফাইনালেই গোল করেছেন। এই রায় তাই শুধু একটি ফুটবল ম্যাচ বা খেলোয়াড়ের জয় নয়, এটি সামাজিক ন্যায়বিচারের এক শক্ত বার্তা: স্পেনে বর্ণবাদ আর বরদাস্ত করা হবে না।