ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার মধ্যে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি উভয়পক্ষকে ‘দায়িত্বশীল সমাধান’ খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছে। সোমবার (২৮ এপ্রিল) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, তারা ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে এবং উভয় পক্ষকে দায়িত্বশীল উপায়ে সমস্যার সমাধান করার জন্য উৎসাহিত করছে। এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে সমর্থন জানালেও সরাসরি পাকিস্তানকে দোষারোপ করেনি। ভারত অভিযোগ করেছে, ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সংঘটিত হামলার জন্য পাকিস্তান দায়ী, যেখানে ২৪ জনের বেশি মানুষ নিহত হন। পাকিস্তান এ অভিযোগ অস্বীকার করে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র রয়টার্সকে বলেন, “এটি একটি ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতি এবং আমরা তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা ভারত ও পাকিস্তানের সরকারগুলোর সঙ্গে একাধিক স্তরে যোগাযোগ করছি।” তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সকল পক্ষকে দায়িত্বশীল সমাধানের জন্য একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানায় এবং পেহেলগামের সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা করে ভারতের পাশে রয়েছে।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের এশিয়ায় চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলার কৌশলের অংশ হিসেবে ভারত একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারে পরিণত হয়েছে। অপরদিকে, ২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের পর পাকিস্তানের কূটনৈতিক গুরুত্ব অনেকটাই কমে গেছে।
ওয়াশিংটনভিত্তিক দক্ষিণ এশিয়া বিশ্লেষক ও Foreign Policy ম্যাগাজিনের লেখক মাইকেল কুগেলম্যান জানান, বর্তমানে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের অনেক বেশি ঘনিষ্ঠ অংশীদার। ইসলামাবাদ এতে উদ্বিগ্ন হতে পারে, কারণ যদি ভারত সামরিক প্রতিক্রিয়া জানায়, তবে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী উদ্যোগের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে পারে এবং বাধা দেবে না। তিনি আরও বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ ও গাজায় ইসরায়েল যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক ব্যস্ততা বেড়েছে, ফলে ট্রাম্প প্রশাসন সম্ভবত ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনায় শুরুতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করবে না।
পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রদূত ও হাডসন ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো হুসেইন হাক্কানি বলেন, এবারের উত্তেজনা প্রশমনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিশেষ আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, সীমান্তপারের সন্ত্রাসবাদ নিয়ে ভারতের দীর্ঘদিনের অভিযোগ রয়েছে এবং পাকিস্তানের ধারণা, ভারত পাকিস্তানকে দুর্বল করতে চায়। কয়েক বছর পরপর দুই দেশের মধ্যে এমন উত্তেজনা তৈরি হয়, তবে এবারের পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা কম।