বাংলাদেশ জাতীয় দলের জার্সিতে মাঠে নামার অপেক্ষায় থাকা তরুণ ফুটবলার সামিত সোমের জন্য বড় এক অগ্রগতি এসেছে আজ। কানাডার ফুটবল ফেডারেশন থেকে তার অনাপত্তিপত্র (NOC) পেয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। বিস্ময়করভাবে, এই ছাড়পত্র এসেছে সামিতের বাংলাদেশি পাসপোর্ট হওয়ার আগেই!
বাফুফের সহ-সভাপতি ফাহাদ করিম জানিয়েছেন, ‘আজ সকালে আমরা কানাডা ফুটবল ফেডারেশনের চিঠি হাতে পেয়েছি। এতে সামিতের কানাডার হয়ে কত মিনিট খেলেছেন, কোন কোন ম্যাচে অংশ নিয়েছেন—সব তথ্য বিস্তারিতভাবে রয়েছে। আগামীকাল ওর পাসপোর্টের জন্য আবেদন করব। পাসপোর্ট হাতে পেলেই আমরা ফিফার কাছে আনুষ্ঠানিক আবেদন করব।’
সামিত সোমের জন্ম কানাডায়। সেখানেই বেড়ে ওঠা ও খেলোয়াড়ি জীবন শুরু। কিন্তু হৃদয়ে তিনি লাল-সবুজের প্রতিনিধিত্ব করতে চান, এমন ইচ্ছার কথা বহুবার জানিয়েছেন। এই স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দিতে বাফুফে আগেভাগেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র—বিশেষ করে জন্মনিবন্ধন ও আত্মঘোষণামূলক চিঠি—দিয়ে কানাডার ফুটবল ফেডারেশনের কাছে অনাপত্তিপত্র চেয়ে আবেদন করে। সাধারণত পাসপোর্ট হওয়ার পর এই ধরনের আবেদন করা হয়। তবে সামিতের দৃঢ় সংকল্প দেখে বাফুফে ব্যতিক্রমী পথে হেঁটেই চিঠি পাঠায় এবং ইতিবাচক সাড়া মেলে।
এই মুহূর্তে সামনের ধাপ হলো—বাংলাদেশি পাসপোর্ট সংগ্রহ। কানাডায় অবস্থিত বাংলাদেশ হাই কমিশন প্রস্তুত রয়েছে আবেদন গ্রহণের জন্য। পাসপোর্ট হাতে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফিফার প্লেয়ার স্ট্যাটাস কমিটির কাছে আবেদন করা হবে, যেন সামিত বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচে অংশ নিতে পারেন।
আগামী ১০ জুন ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ সিঙ্গাপুর। সেই ম্যাচে সামিতকে খেলাতে চাইলে ৩ জুনের মধ্যেই ফিফার সবুজ সংকেত পেতে হবে। বাফুফে আশাবাদী, সময়মতো সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
তবে ফিফার গতিমাত্রা সব সময় একই নয়—ইংল্যান্ডে জন্ম নেওয়া বাংলাদেশি ফুটবলার হামজা চৌধুরীর বেলায় সিদ্ধান্ত পেতে সময় লেগেছিল তিন মাসের বেশি। এবার দেখা যাক, সামিতের ক্ষেত্রে কতটা দ্রুত সিদ্ধান্ত আসে।
বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে প্রবাসী খেলোয়াড়দের অবদান বাড়ছে দিন দিন। সামিত সোম সেই তালিকায় নতুন এক সম্ভাবনার নাম হয়ে উঠছেন। আজকের এই ছাড়পত্র তার বাংলাদেশের হয়ে খেলার স্বপ্নপথকে অনেকটাই প্রশস্ত করে দিয়েছে। এখন শুধু অপেক্ষা—পাসপোর্ট ও ফিফার চূড়ান্ত অনুমতির।