ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনীর ধারাবাহিক ও ভয়াবহ হামলার মুখে যুক্তরাষ্ট্রের অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানবাহী রণতরী ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যান লোহিত সাগর ত্যাগ করে উত্তরাঞ্চলের নিরাপদ এলাকার দিকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছে। ইরানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম তেহরান টাইমস প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বুধবার (৩০ এপ্রিল) এই তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, হুতি বিদ্রোহীরা একযোগে ক্রুজ ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন এবং রকেট দিয়ে রণতরীটির ওপর হামলা চালায়। এ তীব্র আক্রমণের ফলে মার্কিন বাহিনীর মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয় এবং আত্মরক্ষার প্রচেষ্টায় তারা দিক পরিবর্তন করে। এই প্রক্রিয়ায় রণতরীর ডেকে থাকা একটি এফ/এ-১৮ই সুপার হর্নেট যুদ্ধবিমান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সাগরে পড়ে যায়। বিমানটির আনুমানিক মূল্য প্রায় ৬৭ কোটি ডলার।
ইয়েমেনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঘনিষ্ঠ সূত্র দাবি করেছে, তারা ইউএসএস ট্রুম্যানে সরাসরি আঘাত হানার সম্ভাবনা নাকচ করছে না। সূত্রটির মতে, এই রণতরী যে কোনো সময় লোহিত সাগর ত্যাগ করবে— এটি এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা।
২৮ এপ্রিল ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনী এক বিবৃতিতে এই হামলার দায় স্বীকার করে জানায়, এটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের আগের হামলার পাল্টা জবাব, যেখানে বেসামরিক নাগরিক ও শরণার্থীরা নিহত হয়। এই প্রতিরোধ অভিযানে ইয়েমেনের নৌবাহিনী, ক্ষেপণাস্ত্র ইউনিট এবং ড্রোন স্কোয়াড সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে।
ঘটনার পর মার্কিন নৌবাহিনী থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া না এলেও, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই হামলা হুতি বিদ্রোহীদের সামরিক সক্ষমতা এবং যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম এশিয়া নীতির দুর্বলতা উভয়কেই প্রকাশ করেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, হুতিদের এই আক্রমণ মার্কিন আধিপত্যের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে এবং লোহিত সাগরে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের জন্য আরও জটিল পরিস্থিতির জন্ম দিতে পারে।