একজন শিক্ষক মোমবাতির মতো, যিনি নিজে জ্বলে অন্যদের আলো দেন। শিক্ষার্থীর সাফল্যের পেছনে তার অক্লান্ত পরিশ্রম, ভালোবাসা ও ত্যাগ লুকিয়ে থাকে। অথচ আমরা কতবার সেই ত্যাগের কথা ভাবি? প্রিয় শিক্ষক কে—এই প্রশ্নের উত্তর আমরা সহজেই দিতে পারি, কিন্তু কয়জনই বা বলেন, “ধন্যবাদ আপনাকে, আপনি আছেন বলেই আমি আজকের আমি।”
শিক্ষক শুধু পাঠ্যবইয়ের জ্ঞান দেন না, শেখান কীভাবে মানুষ হতে হয়। জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে তার শিক্ষা পথ দেখায়। কিন্তু ব্যস্ত জীবনের ভিড়ে আমরা প্রায়ই ভুলে যাই সেই নিঃস্বার্থ ভালোবাসা ও ত্যাগের কথা। তাই আজকের দিনটি বিশেষ—কারণ আজ ৫ অক্টোবর, বিশ্ব শিক্ষক দিবস।
আজই সেই দিন, যখন একটি ধন্যবাদ, একটুখানি হাসি ও সম্মান দিয়ে আমরা আমাদের শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি। কারণ শিক্ষকরা কখনোই বেশি কিছু চান না—তারা চান শুধু তাদের শিক্ষার্থীর সাফল্য ও মানুষ হয়ে ওঠা।
শিক্ষক সভ্যতার অগ্রদূত, জাতির বিবেক এবং মানুষ গড়ার কারিগর। তার হাতেই গড়ে ওঠে একটি প্রজন্মের চিন্তা, নৈতিকতা ও চরিত্রের ভিত্তি। তাই তাকে বলা হয় ‘গুরু’—যিনি অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে যান। জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে তারা তৈরি করেন সৎ, নৈতিক ও সচেতন নাগরিক। শুধু পাঠ্যবই নয়, তারা শেখান জীবনের পথচলা, মূল্যবোধ ও মানবতা।
বিশ্ব শিক্ষক দিবস প্রথম পালিত হয় ১৯৯৪ সালে, ইউনেস্কোর ঘোষণার পর। এর আগে, ১৯৯৩ সালে প্যারিসে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর ২৬তম সাধারণ অধিবেশনে ৫ অক্টোবর দিনটিকে ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৯৯৫ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী এ দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। ইউনেস্কোর মতে, শিক্ষা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এই দিবসটি উদযাপিত হয়। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ১০০টি দেশে এডুকেশন ইন্টারন্যাশনাল এবং এর সহযোগী ৪০১টি সংগঠনের অংশগ্রহণে এই দিবসটি পালন করা হয়।
বাংলাদেশেও বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো প্রতিবছর পালিত হয় বিশ্ব শিক্ষক দিবস, এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এটি সরকারিভাবেও উদযাপিত হচ্ছে। এ দিনে দেশজুড়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে কৃতজ্ঞতা, সম্মান ও ভালোবাসার সম্পর্ক আরও গভীর হয়ে ওঠে।