আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ঋণের অর্থ ছাড় করতে অতিরিক্ত শর্ত আরোপ করলে, বাংলাদেশ সরে আসবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী। তিনি জানিয়েছেন, আইএমএফের শর্ত মেনে চললে দেশের অর্থনীতি আরও দুর্বল হয়ে পড়বে।
শনিবার (৩ মে) রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলে বাজেট বিষয়ক সেমিনারে এ কথা বলেন আনিসুজ্জামান। তিনি বলেন, “আইএমএফের অতিরিক্ত শর্ত যদি বাংলাদেশে আরোপ করা হয়, তাহলে আমরা সেই শর্তগুলো মেনে নেব না। কারণ এসব শর্ত বাস্তবায়ন করলে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।”
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশের অর্থনীতি বর্তমানে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে এবং আইএমএফের শর্তগুলো দেশের আর্থিক সুস্থতায় অবদান রাখতে পারে না। “আমরা ঋণ নিতে চাই, কিন্তু সেই ঋণ দেশের অর্থনীতি ও জনগণের জন্য উপকারী হতে হবে,” বলেন আনিসুজ্জামান।
এদিকে, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের সঙ্গে আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। তার পর থেকে একাধিক কিস্তি বাংলাদেশে এসেছে, তবে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি ছাড়ে এখনও অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ আগামী বছরই স্বল্পোন্নত দেশ (LDC) থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার জন্য চূড়ান্ত স্বীকৃতি পাবে, যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অবস্থানকে শক্তিশালী করবে।
এই পরিস্থিতিতে, কৃষি খাতের উন্নয়ন ও ভর্তুকি বৃদ্ধির জন্য সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণের পাশাপাশি পোল্ট্রি ফিড তৈরির কাঁচামালের আমদানিতে ভ্যাট শুল্ক কমানোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন কৃষি অর্থনীতিবিদরা। তাঁদের মতে, খামারিদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ এবং প্রণোদনা প্রদান করা উচিত।
আইএমএফের সাথে ঋণ চুক্তি চলমান থাকলেও, সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে যেন শর্তগুলো নিয়ে আরও সতর্ক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, যাতে দেশের অর্থনীতি দীর্ঘমেয়াদী সুস্থতার পথে এগিয়ে যেতে পারে।