হাতের জয়েন্ট বা গাঁটে ব্যথা হওয়া একটি সাধারণ সমস্যা, যা বয়স, কাজের ধরন কিংবা বিভিন্ন রোগের কারণে হতে পারে। এই ব্যথা কখনো হালকা অস্বস্তি তৈরি করে, আবার কখনো দৈনন্দিন কাজকর্মে বাধা দেয়। নিচে হাতের জয়েন্টে ব্যথার সাতটি প্রধান কারণ তুলে ধরা হলো—
১. আর্থ্রাইটিস (Arthritis):
এটি জয়েন্ট ব্যথার সবচেয়ে সাধারণ কারণ। আর্থ্রাইটিসের দুটি প্রধান ধরন হলো—
অস্টিওআর্থ্রাইটিস (Osteoarthritis): বয়স বৃদ্ধি বা জয়েন্টের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে কার্টিলেজ ক্ষয় হয়ে ব্যথা ও শক্ত ভাব দেখা দেয়।
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস (Rheumatoid Arthritis): শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিজ জয়েন্টের টিস্যু আক্রমণ করে, ফলে প্রদাহ ও ব্যথা সৃষ্টি হয়।
২. টেনডোনাইটিস (Tendinitis):
জয়েন্টের চারপাশের টেন্ডন ফুলে গেলে এই ব্যথা হয়। অতিরিক্ত টাইপ করা, ভারী জিনিস তোলা বা দীর্ঘ সময় হাত ব্যবহার করা এর মূল কারণ।
৩. গাউট (Gout):
শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গেলে তা জয়েন্টে জমে ব্যথা, ফোলাভাব এবং লালচে ভাব তৈরি করে।
৪. ইনজুরি বা আঘাত:
হঠাৎ পড়ে যাওয়া, হাত মচকানো বা হাড়ে ছোট ফাটল থাকলে জয়েন্টে ব্যথা হতে পারে।
৫. বার্সাইটিস (Bursitis):
জয়েন্টের চারপাশে থাকা তরলভর্তি ছোট থলি বা bursa ফুলে গেলে ব্যথা, ফোলা ও অস্বস্তি দেখা দেয়।
৬. ভিটামিন ডি বা ক্যালসিয়াম ঘাটতি:
এই দুই পুষ্টির অভাবে হাড় ও জয়েন্ট দুর্বল হয়ে পড়ে, ফলে সহজেই ব্যথা অনুভূত হয়।
৭. ঠান্ডা বা আর্দ্র আবহাওয়া:
অনেকের ক্ষেত্রে ঠান্ডা আবহাওয়ায় জয়েন্ট শক্ত হয়ে যায় এবং ব্যথা বেড়ে যায়।
কি করবেন:
১. হালকা গরম পানির সেঁক দিন, এটি ব্যথা ও প্রদাহ কমায়।
২. ভারী কাজ বা টাইপিংয়ের পর নিয়মিত বিরতি নিন।
৩. প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ওষুধ (যেমন আইবুপ্রোফেন) ব্যবহার করুন।
৪. পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি ও ওমেগা-৩ যুক্ত খাবার খান।
যদি ব্যথা এক সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয়, অথবা ফোলাভাব, জ্বর কিংবা আঙুল বাঁকা হয়ে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দেয়, তবে দেরি না করে রিউমাটোলজিস্ট বা অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।