বাংলাদেশের বিজ্ঞানী ও তুরস্কের ইয়িলডিজ টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর শাহেন শাহ তৈরি করেছেন একটি উদ্ভাবনী পদ্ধতি, যা ড্রোন ব্যবহার করে দুর্যোগের সময় যোগাযোগ ব্যবস্থা বজায় রাখার এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।
শাহেন শাহ’র মডেলটি এমনভাবে কাজ করে যে, ড্রোনগুলো বেস স্টেশন হিসেবে কাজ করতে পারে এবং সেলুলার নেটওয়ার্কের মতো যোগাযোগ পরিষেবা প্রদান করতে সক্ষম। বিশেষ করে ভূমিকম্প, বন্যা বা অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় যখন প্রচলিত মোবাইল নেটওয়ার্কগুলো অচল হয়ে যায়, তখন তার এই মডেলটি যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তুরস্কের গণমাধ্যমে তার এই উদ্ভাবন ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছে এবং এটি ড্রোনস জার্নাল-এ প্রকাশিত হয়েছে, যা বৈজ্ঞানিক সমাজে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
শাহেন শাহ বাংলাদেশের ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক সম্পন্ন করার পর দেশের সেরা ছাত্রদের মধ্যে ছিলেন। তিনি তার উচ্চশিক্ষা বাংলাদেশেই শুরু করেছিলেন, পরে তুরস্ক সরকারের একটি স্কলারশিপ নিয়ে পিএইচডি করতে তুরস্কে যান। তুরস্কে পিএইচডি চলাকালীন সময়ে, তিনি স্বয়ংক্রিয় যানবাহনগুলির মধ্যে যোগাযোগ বিলম্ব কমানোর উপর কাজ করে সোনালী পদক লাভ করেন। বর্তমানে, শাহেন শাহ তুরস্কের এআই এবং নেক্সট জেনারেশন ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন ল্যাব এর পরিচালক হিসেবে বিভিন্ন গবেষণা প্রকল্প পরিচালনা করছেন। তার নেতৃত্বে, এই ল্যাবের গবেষকরা মেধাবী এবং নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনে কাজ করছেন, যার মধ্যে অন্যতম তার দুর্যোগকালীন যোগাযোগ পদ্ধতি।
তিনি তার উদ্ভাবনকে তার সবচেয়ে বড় সাফল্য মনে করেন, কারণ তিনি বিশ্বাস করেন যে এটি বিপর্যয়ের সময় যোগাযোগ ব্যবস্থাকে নিশ্চিত করে হাজার হাজার জীবন বাঁচাতে সাহায্য করতে পারে। তার কাজের প্রতি তাত্ত্বিক গুরুত্বের পাশাপাশি, এটি বাস্তবিক জীবনে কার্যকরী প্রমাণিত হতে পারে, যা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যবহৃত হতে পারে।
শাহেন শাহ’র উদ্ভাবন প্রমাণ করে যে, বিজ্ঞানী শুধু নতুন প্রযুক্তি ও তত্ত্ব তৈরি করেন না, বরং মানুষের জীবন রক্ষার জন্য তা ব্যবহারযোগ্য করে তোলে। তার গবেষণা পৃথিবীর নানা প্রান্তে দুর্যোগকালীন ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।