ধ্রুব রাঠির প্রথম স্টার্টআপ ‘AI Fiesta’ এআই দুনিয়ায় এক ঝড় তুলেছে। ভারতের জনপ্রিয় ইউটিউবার, শিক্ষামূলক কনটেন্ট নির্মাতা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাবশালী মুখ ধ্রুব রাঠি ১৪ আগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে এই উদ্যোগের যাত্রা শুরু করেন। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, মাত্র ৩৬ ঘণ্টার মধ্যেই প্ল্যাটফর্মটি ৩ মিলিয়ন ডলার বাৎসরিক আয়ের (Annual Recurring Revenue – ARR) মাইলফলক স্পর্শ করেছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩০ কোটি টাকার সমান। এরই মধ্যে ২০ হাজারেরও বেশি সাবস্ক্রাইবার পেইড মেম্বারশিপ গ্রহণ করেছেন।
‘AI Fiesta’ আসলে কী?
এটি একটি এআই সুপার-অ্যাপ, যেখানে এক প্ল্যাটফর্মে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় একাধিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মডেলের সেবা পাওয়া যাবে। ফলে ব্যবহারকারীদের আলাদা আলাদা সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে না। এখানে একসাথে পাওয়া যাচ্ছে ছয়টি প্রিমিয়াম মডেল—ChatGPT-5 Plus, Gemini 2.5 Pro, Claude 4 Sonnet, Grok 4, Perplexity Sonar Pro এবং DeepSeek। ব্যবহারকারীরা চাইলে সব মডেলের উত্তর পাশাপাশি তুলনা করতে পারবেন, নির্দিষ্ট মডেলের সঙ্গে আলাপ চালিয়ে যেতে পারবেন এবং প্রজেক্টভিত্তিক প্রম্পট তৈরি, ছবি তৈরি (Image Generation), অডিও ট্রান্সক্রিপশনসহ নানা সুবিধা পাবেন।
সাবস্ক্রিপশন ও সুবিধা
মাসিক সাবস্ক্রিপশন ৯৯৯ টাকা, আর বার্ষিক সাবস্ক্রিপশন নিলে গড়ে প্রতি মাসে খরচ পড়বে ৮৩৩ টাকা। আন্তর্জাতিক কার্ড ছাড়াও UPI পেমেন্ট ব্যবস্থার সুবিধা থাকায় ভারতীয় ব্যবহারকারীদের জন্য এটি সহজলভ্য। পাশাপাশি সাবস্ক্রাইবাররা পাচ্ছেন ৩ হাজারেরও বেশি প্রম্পট সমৃদ্ধ Ultimate Prompt Book, বিশেষ এআই শেখার কমিউনিটিতে যুক্ত হওয়ার সুযোগ, এবং নিয়মিত ওয়েবিনার ও কর্মশালার সুবিধা।
কারা আছেন উদ্যোগের পেছনে?
ধ্রুব রাঠির পাশাপাশি এই স্টার্টআপের সহ-প্রতিষ্ঠাতা হয়েছেন ওয়াই কমবিনেটর অ্যালামনাই মোহাম্মদ হাসান ও দিব্যাংশু দামানি। তাঁরা দু’জনই এর আগে ভারতীয় স্টার্টআপ TagMango-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন, যা মূলত ক্রিয়েটর ইকোনমিকে কেন্দ্র করে কাজ করত।
সমালোচনা ও বিতর্ক
প্রথম সাফল্যের পাশাপাশি ‘AI Fiesta’ ঘিরে কিছু সমালোচনাও দেখা দিয়েছে। সাবস্ক্রাইবাররা মাসে সর্বোচ্চ ৪ লাখ টোকেন ব্যবহার করতে পারবেন, তবে একসাথে একাধিক এআই মডেল ব্যবহার করলে সীমা দ্রুত শেষ হয়ে যায়। এছাড়া প্রশ্ন উঠেছে—আসলে কি সর্বশেষ ও প্রিমিয়াম সংস্করণের এআই মডেলগুলো এখানে দেওয়া হচ্ছে? ধ্রুব রাঠির অতীতের কিছু ক্রিপ্টো-সংক্রান্ত বিতর্কও নতুন উদ্যোগ নিয়ে সংশয় তৈরি করেছে সমালোচকদের মধ্যে।
সম্ভাবনার নতুন দুয়ার
তবু সব সমালোচনা উপেক্ষা করেও শুরুর এই সাফল্য প্রমাণ করছে—ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার বাজারে কম খরচে, এক প্ল্যাটফর্মে একাধিক এআই টুলস ব্যবহারের চাহিদা প্রবল। এখন কেবল সময়ই বলে দেবে, ধ্রুব রাঠির প্রথম স্টার্টআপ দীর্ঘমেয়াদে কতটা আস্থা অর্জন করতে পারে এবং বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় কতটা টিকে থাকতে সক্ষম হয়।