সন্তানের স্বাভাবিক উচ্চতা বৃদ্ধি নিয়ে অনেক বাবা-মায়ের উদ্বেগ থাকে। অনেকে ভাবেন, হয়তো সন্তান যথেষ্ট খাচ্ছে না বলেই তার উচ্চতা বাড়ছে না। কিন্তু আসলে খাওয়ার পরিমাণের চেয়ে খাবারের গুণগত মান ও পুষ্টি উপাদান অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। শিশুদের বৃদ্ধি ও উচ্চতা বাড়াতে প্রয়োজন যথাযথ প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন, আয়রন ও অন্যান্য খনিজ উপাদান। কিছু ফলের রস এই প্রাকৃতিক পুষ্টি সরবরাহ করে হাড় মজবুত করতে ও উচ্চতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। নিচে এমন তিনটি ফলের রসের কথা বলা হলো, যেগুলো শিশুদের ডায়েটে নিয়মিত রাখলে উপকার পাওয়া যায়।
১. পেয়ারার রস:
পেয়ারা খেতে যেমন সুস্বাদু, এর রসও তেমন পুষ্টিকর। এতে আছে ভিটামিন C, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়; ক্যালসিয়াম, যা হাড় মজবুত করে; এবং ভিটামিন B ও ফাইবার, যা হজমে সহায়তা করে। নিয়মিত পেয়ারার রস পান করলে শিশুর হজমশক্তি উন্নত হয়, ফলে পুষ্টি শোষণ ভালোভাবে হয় এবং উচ্চতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
টিপস: ঘরে টাটকা পেয়ারা ব্লেন্ড করে অল্প পানি ও মধু মিশিয়ে একটি স্বাস্থ্যকর জুস তৈরি করুন।
২. স্ট্রবেরির রস:
স্ট্রবেরি যেমন দেখতে আকর্ষণীয়, এর গুণও তেমনি অসাধারণ। এতে থাকে ভিটামিন C, আয়রন ও ক্যালসিয়াম, যা হাড় ও রক্তের জন্য দরকারি। এছাড়া এর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট কোষকে সুস্থ রাখে এবং প্রোটিন হাড়ের বৃদ্ধি ঘটায়। স্ট্রবেরির রস শিশুদের হাড় শক্তিশালী করে ও প্রয়োজনীয় খনিজ সরবরাহ করে, যা তাদের স্বাভাবিক বৃদ্ধি নিশ্চিত করে।
টিপস: মৌসুমে টাটকা স্ট্রবেরি দিয়ে রস বানান, চাইলে এর সঙ্গে দুধ বা কলা যোগ করে আরও পুষ্টিকর করতে পারেন।
৩. কলার শেক:
কলা শিশুদের জন্য একটি আদর্শ ফল। এতে আছে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম, যা হাড় ও পেশিকে মজবুত করে। ভিটামিন B6, ফাইবার, প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম শিশুর দেহগঠন ও বৃদ্ধি উন্নত করে। প্রতিদিন এক গ্লাস কলার শেক খেলে শক্তি বাড়ে, হজম ভালো হয় এবং উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি মেলে।
টিপস: দুধ, কলা, অল্প মধু ও বাদাম দিয়ে সুস্বাদু ও পুষ্টিকর কলার শেক তৈরি করুন।
অতিরিক্ত পরামর্শ:
শুধু ফলের রস খেলেই উচ্চতা বাড়ে না। এর সঙ্গে দরকার সঠিক ঘুম (৮–১০ ঘণ্টা), নিয়মিত ব্যায়াম ও খেলাধুলা (যেমন সাঁতার, দড়িলাফ, বাস্কেটবল), পর্যাপ্ত পানি পান এবং প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার ও সবজি খাওয়া। উচ্চতা বৃদ্ধি একটি ধীর ও প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া, তাই সন্তানকে জোর না করে স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলুন।
যদি সন্তানের উচ্চতা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কম হয়, তবে একজন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের (পেডিয়াট্রিশিয়ান) পরামর্শ নেওয়া জরুরি, কারণ এর পেছনে অন্য কোনো শারীরিক কারণ থাকতে পারে।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস (বাংলা)