বর্তমানে ইন্টারনেট আমাদের দৈনন্দিন জীবনের এক অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। শহর হোক কিংবা গ্রাম, সব শ্রেণির মানুষই এখন নিয়মিত ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। কাজ, শিক্ষা, বিনোদন—সবক্ষেত্রেই নিরবচ্ছিন্ন ও দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য অনেকেই মোবাইল ইন্টারনেটের পাশাপাশি বাসায় ওয়াই-ফাই রাউটার ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু অনেক সময় ভালো মানের রাউটার থাকা সত্ত্বেও কাঙ্ক্ষিত গতি পাওয়া যায় না। এর অন্যতম কারণ হলো রাউটারের অবস্থান। ইন্টারনেট বিশেষজ্ঞদের মতে, ভুল জায়গায় রাউটার রাখলে তার কার্যকারিতা কমে যেতে পারে এবং ইন্টারনেটের গতি মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হয়।
প্রথমত, রাউটার কখনোই ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতির আশপাশে রাখা উচিত নয়। যেমন—টেলিভিশন, মাইক্রোওয়েভ, কর্ডলেস ফোন বা ব্লুটুথ স্পিকারের মতো ডিভাইসগুলো রাউটারের সিগন্যালের সঙ্গে সংঘর্ষ তৈরি করতে পারে, যা সংযোগে ব্যাঘাত ঘটায়। রাউটারকে এসব যন্ত্রপাতি থেকে অন্তত তিন ফুট দূরে রাখা বাঞ্ছনীয়।
দ্বিতীয়ত, অনেকেই সৌন্দর্যের জন্য রাউটারকে ক্যাবিনেট, আলমারি কিংবা ড্রয়ারে লুকিয়ে রাখেন। কিন্তু এসব জায়গা রাউটারের সিগন্যাল ঠিকভাবে ছড়াতে বাধা দেয়। ফলে সংযোগ দুর্বল হয় এবং নেটওয়ার্কে ধীরগতি দেখা দেয়।
তৃতীয়ত, রাউটার ঘরের এক কোণে কিংবা বেসমেন্টে রাখা উচিত নয়। কারণ রাউটারের তরঙ্গ চারদিকে সমানভাবে ছড়ায়। কোণায় রাখলে একটি বড় অংশ দেয়ালে আটকে যায় বা বাইরে চলে যায়, যার ফলে ঘরের অন্যান্য অংশে দুর্বল সিগন্যাল পাওয়া যায়।
এছাড়া কংক্রিটের পুরু দেয়াল ও ধাতব আসবাবপত্র ওয়াই-ফাই তরঙ্গ শোষণ করতে পারে। এতে করে ইন্টারনেটের গতি আরও কমে যায় এবং সংযোগে সমস্যা দেখা দেয়।
রাউটারের সর্বোচ্চ কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে এটি রাখার উপযুক্ত স্থান হলো—বাড়ির কেন্দ্রস্থলে কোনো খোলা জায়গায়, মাটির চেয়ে কিছুটা উঁচুতে, যেখানে বাধা কম এবং সিগন্যাল সহজেই চারদিকে ছড়াতে পারে।