আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) থেকে সারাদেশে শুরু হচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা। এবার অংশ নিচ্ছে মোট ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন পরীক্ষার্থী। তবে পরীক্ষার প্রাক্কালে দেশে নতুন করে করোনাভাইরাসের ধরন ছড়ানোর শঙ্কা এবং ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার।
পরীক্ষার সার্বিক নিরাপত্তা ও নকল রোধে নেয়া হয়েছে একাধিক কঠোর পদক্ষেপ। প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে এক ডজনের বেশি নতুন ব্যবস্থা গ্রহণ, বিভিন্ন কেন্দ্রে রদবদল এবং ২৯৫টি ভেন্যু কেন্দ্র বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে কুমিল্লা বোর্ড সবচেয়ে বেশি ১৫০টি এবং ঢাকা বোর্ড ৭০টি ভেন্যু বাতিল করেছে। এই উদ্যোগগুলো পরীক্ষাকে সুষ্ঠু ও নকলমুক্ত করার লক্ষ্যে গ্রহণ করা হয়েছে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড জানায়, ২৬ জুন থেকে শুরু হয়ে তত্ত্বীয় পরীক্ষা চলবে ১০ আগস্ট পর্যন্ত। ব্যবহারিক পরীক্ষা হবে ১১ থেকে ২১ আগস্ট পর্যন্ত। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল কবির বলেন, এবারকার পরীক্ষাটি অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি চ্যালেঞ্জিং। কারণ, করোনা ও ডেঙ্গুর মতো স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যেই পরীক্ষা আয়োজন করতে হচ্ছে। এজন্য বোর্ডের একাধিক মনিটরিং টিম কাজ করবে।
নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে পরীক্ষাকেন্দ্রে সংশ্লিষ্ট থানার ট্যাগ অফিসার এবং পুলিশের উপস্থিতিতে প্রশ্নপত্র খোলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অব্যবহৃত প্রশ্নপত্র খোলা যাবে না এবং তা অক্ষত অবস্থায় ফেরত পাঠাতে হবে। পরীক্ষা শেষে উত্তরপত্র যথাযথভাবে পুলিশি পাহারায় পরীক্ষানিয়ন্ত্রকের দপ্তরে জমা দিতে হবে।
স্বাস্থ্যসুরক্ষার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে পরীক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলক মাস্ক পরা, কেন্দ্রের ভেতর ও আশপাশে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং মশক নিধনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মেডিকেল টিম এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। পরীক্ষা শুরুর আগে মশা নিয়ন্ত্রণে স্প্রে করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা পরিচালনার জন্য আন্তঃশিক্ষা বোর্ড কেন্দ্র সচিবদের জন্য ৩৩টি নির্দেশনা দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রশ্নপত্র সংরক্ষণে ট্রেজারিতে সর্বোচ্চ সতর্কতা, ট্রেজারি অফিসার, কেন্দ্র সচিব ও পরীক্ষাপরিচালনা কমিটির উপস্থিতি, এবং কোনো অবস্থাতেই উপজেলা সদরের বাইরে প্রশ্ন সংরক্ষণ না করার নির্দেশনা।
এ বছর পরীক্ষার্থী সংখ্যা গত বছরের তুলনায় ৮১ হাজার ৮৮২ জন কমেছে, যা গত তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এবার ৬ লাখ ১৮ হাজার ১৫ জন ছাত্র এবং ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৯৬ জন ছাত্রী অংশ নিচ্ছেন।