আজকাল স্মার্টফোন শুধু যোগাযোগের মাধ্যম নয়—এটি আমাদের ব্যক্তিগত জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। ফোনে সংরক্ষিত থাকে ছবি, ভিডিও, গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট, ব্যাংক তথ্য, পাসওয়ার্ডসহ অসংখ্য গোপন তথ্য। ফলে ফোন হারানো বা হ্যাক হওয়ার অর্থ শুধু ডিভাইস হারানো নয়, পুরো জীবনই ঝুঁকির মুখে পড়া। তবে কিছু সহজ নিয়ম মেনে চললেই স্মার্টফোনে থাকা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রাখা যায় নিরাপদে। নিচে দেওয়া হলো এমনই পাঁচটি কার্যকর নিরাপত্তা টিপস—
১️⃣ দরকার নেই? তাহলে ডিলিট করুন
ফোনে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ, পুরোনো মেসেজ বা অচেনা স্ক্রিনশট জমে থাকতে পারে, যা হ্যাকারদের জন্য সুযোগ তৈরি করে। তাই নিয়মিত ফোন পরিষ্কার করুন। খুব গুরুত্বপূর্ণ ফাইল সরাসরি ফোনে না রেখে রাখুন নিরাপদ ক্লাউড স্টোরেজে—যেমন Google Drive বা iCloud। পাশাপাশি ইনকগনিটো মোড ব্যবহার ও মাঝে মাঝে ব্রাউজারের হিস্টোরি ও ক্যাশ মুছে ফেলা ভালো অভ্যাস।
২️⃣ ব্যবহার করছেন না? লগ আউট হয়ে যান
অ্যাপ বা অ্যাকাউন্ট ব্যবহার না করেও লগ ইন অবস্থায় রাখা ঝুঁকিপূর্ণ। বিশেষ করে পুরোনো ইমেইল অ্যাপ, ব্যাকআপ টুল বা এক্সটেনশনগুলো। তাই নিয়মিত সাইন আউট করুন এবং অটো-ডাউনলোড অপশন বন্ধ রাখুন, এতে নিরাপত্তা বাড়বে।
৩️⃣ সুরক্ষিত মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করুন
মেসেজিংয়ের মাধ্যমে ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের আশঙ্কা বেশি থাকে। তাই এমন অ্যাপ ব্যবহার করুন যেখানে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন সুবিধা আছে—যেমন WhatsApp, Signal বা Element। ইমেইলের ক্ষেত্রে ProtonMail-এর মতো নিরাপদ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে পারেন।
৪️⃣ ডেটা এনক্রিপশন অপশন চালু রাখুন
আইফোন ব্যবহারকারীরা ‘Advanced Data Protection’ অন করে রাখলে iCloud-এর তথ্য আরও সুরক্ষিত থাকে। অন্যদিকে, অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীরা Google One ব্যাকআপ ও ক্লায়েন্ট-সাইড এনক্রিপশন চালু রাখতে পারেন, যাতে ডেটার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকে কেবল তাদের হাতেই।
৫️⃣ প্রাইভেসি স্ক্রিন ও পাবলিক ওয়াইফাইয়ে সতর্কতা
পাশ থেকে কেউ যেন আপনার ফোনের পর্দা না দেখতে পারে, এজন্য প্রাইভেসি স্ক্রিন প্রটেক্টর ব্যবহার করুন। আর পাবলিক ওয়াইফাই ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকুন—কারণ এখান থেকেই প্রায়ই ডেটা চুরি হয়ে যায়।
আমাদের ফোন এখন একপ্রকার পকেট কম্পিউটার। তাই স্মার্টফোনের তথ্যের নিরাপত্তা মানে নিজের নিরাপত্তা। এই ছোট ছোট অভ্যাসগুলোই আপনাকে বড় ধরনের সাইবার ঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে পারে। এখনই সচেতন হোন, নিরাপদে থাকুন।
সূত্র: প্রযুক্তি