শিশুদের হাঁপানি একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য সমস্যা, যা অবহেলা করলে দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা তৈরি হতে পারে। এটি মূলত শ্বাসনালির প্রদাহজনিত দীর্ঘস্থায়ী রোগ, যার ফলে শিশু শ্বাসকষ্ট, ঘন ঘন কাশি এবং বুকে চাপ অনুভব করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের CDC-এর তথ্যানুসারে, প্রায় ৬০ লাখ শিশু হাঁপানিতে ভুগছে। বাংলাদেশেও এই রোগ শিশুদের মধ্যে একটি সাধারণ সমস্যা। তাই এর উপসর্গ, কারণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধ সম্পর্কে সচেতন থাকা জরুরি।
হাঁপানির উপসর্গ
শিশুদের হাঁপানির উপসর্গ অনেক সময় সাধারণ সর্দি-কাশির সঙ্গে মিল থাকতে পারে। তবে এগুলো দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং দৈনন্দিন জীবনে ব্যাঘাত ঘটায়। সাধারণ উপসর্গ হলো—
রাতে বা ঠান্ডায় ঘন ঘন কাশি
শ্বাসকষ্ট ও হাঁপ ধরা
শ্বাসের সময় শিসের মতো শব্দ
খেলাধুলার সময় দ্রুত দম ফুরিয়ে আসা
ছোট শিশুদের (টডলারদের) ক্ষেত্রে সরাসরি বোঝানো কঠিন হয়, তাই বাবা-মাকে খেয়াল রাখতে হবে। এ সময় উপসর্গগুলো হলো রাতে ঘুমে ব্যাঘাত, দ্রুত ক্লান্ত হওয়া, বারবার সর্দি-কাশি থেকে সুস্থ হতে দেরি হওয়া ও অতিরিক্ত দুর্বলতা। অন্যদিকে বড় শিশুরা সাধারণত নিজেরাই বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট বা ক্লান্তির কথা জানাতে পারে।
হাঁপানির অ্যাটাক
হাঁপানির উপসর্গ হঠাৎ বেড়ে গেলে সেটিকে অ্যাটাক বলা হয়। গুরুতর অ্যাটাকের সময় তীব্র শ্বাসকষ্ট, ঠোঁট বা নখ নীলচে হয়ে যাওয়া, অস্বাভাবিক হার্টবিট ও বিভ্রান্তি দেখা দিতে পারে। এ অবস্থায় দেরি না করে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে।
কারণ ও ট্রিগার
হাঁপানির পেছনে বংশগত প্রভাব, অ্যালার্জি (ধুলাবালি, পশুর লোম, ফুলের রেণু), বা শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ ভূমিকা রাখতে পারে। এছাড়া কিছু উদ্দীপক (ট্রিগার) উপসর্গ বাড়িয়ে দেয়। যেমন—সর্দি-কাশি বা ফ্লু, ব্যায়াম, ধোঁয়া ও বায়ুদূষণ, ধুলা বা অ্যালার্জেন।
প্রতিরোধ ও যত্ন
হাঁপানির ঝুঁকি কমাতে শিশুকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, ভাইরাস সংক্রমণ থেকে দূরে রাখা এবং ঘরকে ধুলাবালি ও অ্যালার্জেন মুক্ত রাখা জরুরি। খেলাধুলার সময় শ্বাসকষ্ট হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ ব্যবহার করে স্বাভাবিক জীবনযাপন চালিয়ে যাওয়া সম্ভব।
চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া
আপনার সন্তানের মধ্যে হাঁপানির উপসর্গ দেখা দিলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত হলে চিকিৎসা সহজ হয় এবং শিশুর জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রাখা সম্ভব।
সূত্র: হেলথলাইন