কর্মব্যস্ত জীবনে অনেকেই রাতের খাবার দেরিতে খান, যা স্বাস্থ্যের জন্য ভয়াবহ বিপদের কারণ হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিতভাবে রাতে দেরিতে খাওয়া শরীরের শারীরবৃত্তীয় কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটায় এবং নানা জটিল রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। কানাডার নিউট্রিশন পলিসি অ্যান্ড প্রমোশন অফিসের গবেষণায় দেখা গেছে, বেশি রাতে খাবার খেলে শরীরে অস্বস্তি তৈরি হয় এবং হজমপ্রক্রিয়ায় সমস্যা দেখা দেয়।
দেরি করে খাওয়ার কারণে খাবার গ্রহণ ও ঘুমের সময়ের মধ্যে পর্যাপ্ত ব্যবধান থাকে না, ফলে খাবার ঠিকভাবে হজম হয় না। এর ফলে পেটে অ্যাসিডিটি, গ্যাস, মাথা ঘোরা, বমিভাব ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষ করে গরমের সময় দেরিতে খাওয়া শরীরের তাপমাত্রা আরও বাড়িয়ে তোলে, যা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায় এবং রাতে অস্বস্তি বাড়ায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, খাবার হজমের সময় শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায়। তাই রাতে দেরিতে খেলে ঘুমের মান কমে যায় এবং ঘন ঘন ঘুম ভেঙে যায়। এমনকি অনেকের ক্ষেত্রে উদ্ভট স্বপ্ন দেখার প্রবণতাও বাড়ে।
দেরিতে খাওয়ার অভ্যাস শরীরের হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে এবং বিপাকীয় কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এর ফলে ওজন বৃদ্ধি, ডায়াবেটিস, রক্তচাপ, হৃদরোগ এমনকি স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যেও এর প্রভাব পড়ে— উদ্বেগ, অবসাদ ও ক্লান্তিবোধের মতো সমস্যাগুলো দেখা দেয়।
চিকিৎসকরা বলেন, সুস্থ জীবনযাপনের জন্য রাতে সময়মতো খাবার খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক উদাহরণ হিসেবে ধরা যায় রাশিয়াকে, যেখানে মানুষ সাধারণত সন্ধ্যা ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে রাতের খাবার শেষ করেন, যাতে ঘুম ও খাবারের মধ্যে অন্তত তিন ঘণ্টার ব্যবধান থাকে। এই অভ্যাসই তাদের সুস্থ জীবনের অন্যতম রহস্য।