প্রযুক্তি এখন সবার জীবনকে সহজ করে তুলছে। শিশুদেরও ছোট বয়সেই গ্যাজেট ব্যবহারে দক্ষ হতে দেখা যায়। কিন্তু বাস্তব জীবনে কখনো যদি তাদের একা চলতে হয় বা হঠাৎ বিপদে পড়ে, তখন কীভাবে সামলাবে—সে প্রস্তুতি দরকার। তাই ১০ বছর বয়স হওয়ার আগেই শিশুদের কিছু জীবনদক্ষতা শেখানো অত্যন্ত জরুরি। এসব দক্ষতা যেমন তাদের আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে, তেমনি মা-বাবার উদ্বেগও কমাবে।
১. আত্মরক্ষার কৌশল
শিশুকে প্রথমে মানসিকভাবে শক্ত ও আত্মবিশ্বাসী হতে শেখান। তাকে জানাতে হবে—যে কোনো পরিস্থিতিতে হাল ছাড়বে না। আত্মরক্ষার প্রাথমিক কৌশল, যেমন আক্রমণকারীর হাঁটু, ঘাড়, চোখ বা নাকে আঘাত করে দৌড়ে পালানো—এগুলো শিশুকে শেখানো উচিত।
২. মানচিত্র ও দিক চেনা
শিশুকে ছোট বয়স থেকেই গ্লোব বা মানচিত্র দেখান। আশপাশের রাস্তা ও এলাকা চিনিয়ে দিন। এতে কোনোদিন পথ হারালেও সে নিজেই ফিরে আসতে পারবে।
৩. বাড়ির ঠিকানা ও ফোন নম্বর
কথা বলা শেখার পরপরই শিশুকে তার নিজের নাম, বাড়ির ঠিকানা এবং মা-বাবার ফোন নম্বর শিখিয়ে দিন। বিপদে পড়লে এটি তার জন্য সবচেয়ে কার্যকর হবে।
৪. বিপদের বন্ধু চেনা
পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনীর পোশাক চিনিয়ে দিন। ভিড়ে হারিয়ে গেলে বা সমস্যায় পড়লে যেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কাছে যেতে পারে।
৫. ‘না’ বলতে শেখা
শিশুকে শেখাতে হবে নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছু না করতে। সমাজ বা চাপের মুখেও যেন সে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে, তার জন্য ছোটবেলা থেকেই ‘না’ বলতে শেখানো জরুরি।
৬. প্রাথমিক চিকিৎসা
কেটে গেলে বা আঘাত পেলে কীভাবে ক্ষতস্থান পরিষ্কার করতে হবে, ব্যান্ডেজ করতে হবে বা কখন বড়দের সাহায্য নিতে হবে—এসব শেখানো দরকার।
৭. অর্থ ব্যবস্থাপনা
শিশুকে অর্থের সঠিক ব্যবহার শেখান। হাতখরচ বা উপহার পাওয়া টাকা যেন সঠিকভাবে ব্যয় বা সঞ্চয় করতে পারে, সেই শিক্ষা দিন।
৮. রান্নাঘরের কাজ
টুকটাক সবজি কাটা, স্যান্ডউইচ বানানো, মাইক্রোওয়েভে খাবার গরম করা বা টেবিল গোছানোর মতো কাজ শেখান। এতে শিশুর আত্মবিশ্বাস বাড়বে এবং প্রয়োজনে নিজেকে সামলাতে পারবে।
মোটকথা, ছোটবেলা থেকেই এসব শিক্ষা শিশুর জীবনে অভ্যাসে পরিণত হলে সে আত্মনির্ভরশীল, আত্মবিশ্বাসী ও ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হয়ে উঠবে।