রাশিয়ার সস্তা তেল কেনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ উপেক্ষা করছে ভারত। তবে এ পরিস্থিতি দীর্ঘস্থায়ী হবে না— এমনটাই মনে করছেন মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে, এক থেকে দুই মাসের মধ্যেই নয়া দিল্লি আলোচনার টেবিলে ফিরবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করবে।
ব্লুমবার্গকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লুটনিক বলেন, “আমার ধারণা, এক বা দুই মাসের মধ্যেই ভারত বলবে— তারা সরি এবং ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে একটি চুক্তির চেষ্টা করবে।” তিনি আরও সতর্ক করেন, যুক্তরাষ্ট্রকে সমর্থন না করলে ভারতের পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক বহাল থাকবে, যার অর্ধেকই হবে রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনার সাজা।
এর আগে, গত শুক্রবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়ায় ভারত-রাশিয়া-চীনের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। তবে ভারতকে তিনি ‘বিশেষ বন্ধু’ হিসেবেও আখ্যা দেন এবং জানান, নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তার বন্ধুত্ব সবসময় অটুট থাকবে।
অন্যদিকে, ভারতীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, সস্তা ও সহজলভ্য হওয়ায় রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল কিনতেই থাকবে ভারত। তার ভাষায়, “আমরা আমাদের জাতীয় স্বার্থ ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেব। নিঃসন্দেহে রাশিয়ার তেল কেনা অব্যাহত থাকবে।”
ওয়াশিংটন এই অবস্থায় হতাশ হলেও আশাবাদী। হোয়াইট হাউসের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কেভিন হাসেট জানান, ভারত রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ না করায় ট্রাম্প প্রশাসন বিরক্ত হলেও ভবিষ্যতে পরিস্থিতি বদলাবে বলে তারা আশা করছে।
বিশ্লেষকদের মতে, বাণিজ্য ও শুল্ক নিয়ে চলমান টানাপড়েনে আসলে ভূরাজনৈতিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কারণ চীনকে ঠেকাতে ভারতের সমর্থন ওয়াশিংটনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যদিও ট্রাম্প প্রশাসন প্রকাশ্যে তা স্বীকার করছে না।