আজ বিশ্ব ডিম দিবস। প্রতি বছর অক্টোবরের দ্বিতীয় শুক্রবার বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই দিবসটি উদযাপিত হয়। যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল এগ কমিশন (IEC) ১৯৯৬ সালে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় প্রথমবারের মতো বিশ্ব ডিম দিবস উদযাপন করে। এরপর থেকে এটি নিয়মিতভাবে পালন হয়ে আসছে। দিবসটির উদ্দেশ্য হলো ডিমের পুষ্টিগুণ, স্বাস্থ্য উপকারিতা এবং আমিষ ঘাটতি পূরণে এর ভূমিকা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
ডিমকে বলা হয় ‘পরিপূর্ণ খাদ্য’ বা সুপার ফুড। এটি শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ১৩টি পুষ্টি উপাদানে ভরপুর। বাংলাদেশে বর্তমানে মাথাপিছু বছরে গড়ে ১৩৬টি ডিম পাওয়া যায়। ডিমের পুষ্টিগুণ শুধু শারীরিক বিকাশেই নয়, মানসিক বিকাশেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এতে রয়েছে ভিটামিন এ, ডি, ই, কোলিন, ফোলিক এসিড, আয়রনসহ নানা উপাদান, যা রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ, হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা ও শক্তি উৎপাদনে সহায়তা করে।
বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা মা ও শিশুদের জন্য ডিম অত্যন্ত উপকারী। ডিমে থাকা আয়রন শরীরে সহজে শোষিত হয় এবং বিভিন্ন কোষে অক্সিজেন সরবরাহ করে, যা রক্তস্বল্পতা ও ক্লান্তি দূর করতে সহায়ক। এছাড়া ডিমে থাকা টাইরোসিন ও ট্রিপটোফেন নামের দুটি অ্যামাইনো অ্যাসিড হৃদরোগ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
বাংলাদেশে হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপজনিত কারণে প্রতি বছর প্রায় আড়াই লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটে। নিয়মিত ডিম খাওয়া এই ঝুঁকি হ্রাসে সাহায্য করতে পারে। এমনকি ক্যান্সার রোগীদের জন্যও ডিম গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য—এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীরের ক্ষতিগ্রস্ত কোষ পুনর্গঠনে সহায়তা করে। তবে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, ডিম অবশ্যই ভালোভাবে সিদ্ধ করে খাওয়া উচিত।
বর্তমানে বাংলাদেশে বছরে ২ হাজার ৩৭৪ কোটি ৯৭ লাখ ডিম উৎপাদিত হয়। প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ছয় কোটি ডিম উৎপাদনের মাধ্যমে দেশের পুষ্টি নিরাপত্তায় এ খাত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।