ধূমপান একটি ভয়াবহ আসক্তি, যা সরাসরি ফুসফুসে আঘাত করে এবং শ্বাসপ্রশ্বাসের ক্ষমতা দুর্বল করে তোলে। এতে শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমা, এমনকি ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়ে। চিকিৎসকরা বারবার সতর্ক করে বলেন—ধূমপান মানেই ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাওয়া। তবে আশার বিষয় হলো, ধূমপান ছেড়ে দিলে শরীর নিজে নিজে সুস্থ হওয়ার সুযোগ পায়। বিশেষ করে ফুসফুসের ক্ষতি সবসময় স্থায়ী হয় না। সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারা মেনে চললে শরীর দ্রুত আরোগ্যের পথে ফিরতে পারে। যদিও কোনো খাবারই বছরের পর বছর জমে থাকা ক্ষতি পুরোপুরি মুছে ফেলতে পারে না, তবে কিছু খাবার ফুসফুসকে পরিষ্কার রাখতে, প্রদাহ কমাতে এবং প্রাকৃতিক আরোগ্য প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
সম্প্রতি ভারতীয় পালমোনোলজিস্ট ডা. সোনিয়া গোয়েল ধূমপান-পরবর্তী ফুসফুসের যত্নে ৫টি বিশেষ খাবারের পরামর্শ দিয়েছেন। তার মতে, ধূমপান ত্যাগই প্রথম ধাপ, তবে এর সঙ্গে সঠিক খাদ্যতালিকা যুক্ত করলে সুস্থ হওয়ার গতি বহুগুণে বেড়ে যায়।
ক্রুসিফেরাস সবজি যেমন ব্রোকলি, ফুলকপি ও বাঁধাকপিতে রয়েছে সালফোরাফেন নামক যৌগ, যা ফুসফুসের ডিটক্স এনজাইম সক্রিয় করে এবং সিগারেটের ধোঁয়ায় জমে থাকা ক্ষতিকর উপাদান দূর করতে সাহায্য করে।
বিট ও ডালিম নাইট্রেটে সমৃদ্ধ, যা ফুসফুসে অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ায় এবং ধূমপানের কারণে শরীরে তৈরি হওয়া অক্সিজেন ঘাটতি কাটাতে সহায়তা করে।
গ্রিন টি-তে থাকা প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ক্যাটেচিন ফুসফুসের প্রদাহ কমায় এবং সিওপিডি ও ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করে। একই সঙ্গে এটি ওজন নিয়ন্ত্রণ ও মানসিক সতেজতায়ও সহায়ক।
আপেল ও সাইট্রাস ফল-এ থাকা কোয়েরসেটিন ও ভিটামিন সি ফুসফুসের কোষ মেরামতে সাহায্য করে এবং শ্বাসনালীর কার্যক্ষমতা বাড়ায়।
হলুদ-এর কারকিউমিন শক্তিশালী প্রদাহনাশক ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এটি দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ কমায় এবং ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যু দ্রুত পুনর্গঠনে সহায়তা করে।
শেষকথা হলো, ফুসফুস সুস্থ রাখার প্রথম শর্ত হলো ধূমপান ত্যাগ করা। এরপর প্রকৃতির এই পাঁচ দারুণ খাবারকে দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় রাখলে শরীর ধীরে ধীরে নতুন শক্তি ফিরে পাবে। সুষম খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে ধূমপানের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস