বাংলাদেশে দ্রুত বাড়ছে থাইরয়েডজনিত রোগের প্রকোপ। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশের ৪০ শতাংশ নারী থাইরয়েড সমস্যায় আক্রান্ত। তবে আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশই চিকিৎসার আওতার বাইরে রয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) রাজধানীর হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত এক বৈজ্ঞানিক সেমিনারে এসব তথ্য তুলে ধরেন বাংলাদেশ থাইরয়েড সোসাইটির (বিটিএস) বিশেষজ্ঞরা। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশে থাইরয়েডজনিত সব ধরনের সমস্যাকে একসঙ্গে হিসেব করলে তা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩০ শতাংশের কাছাকাছি। বিশেষ করে ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রায় ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে থাইরয়েড রোগ মায়ের কাছ থেকে সন্তানের শরীরে প্রবাহিত হয়। এছাড়া আয়োডিনের অভাব কিংবা অতিরিক্ত আয়োডিন গ্রহণও এ রোগের প্রকোপ বাড়িয়ে দিচ্ছে। তারা আরও বলেন, সচেতনতার অভাব ও প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্ত না হওয়াই থাইরয়েডকে “নীরব ঘাতক রোগ” হিসেবে বিস্তার করতে সাহায্য করছে।
এদিন অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ থাইরয়েড সোসাইটির বার্ষিক সাধারণ সভা, যেখানে দেশের ১২০ জন থাইরয়েড বিশেষজ্ঞ অংশ নেন। সদস্যদের ভোটে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন–নিনমাস, বিএসএমএমইউ-এর প্রধান অধ্যাপক ডা. একেএম ফজলুল বারী সভাপতি এবং অধ্যাপক ডা. নাসরিন সুলতানা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
সভাপতি ডা. ফজলুল বারী বলেন, “রোগটি প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত না হওয়ায় নীরবে ছড়িয়ে পড়ছে। দেশে উন্নত চিকিৎসা পদ্ধতি থাকলেও অধিকাংশ মানুষ জটিল অবস্থায় চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। তাই আমাদের লক্ষ্য সারা দেশে থাইরয়েড বিশেষজ্ঞ তৈরি করা এবং জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।”
বাংলাদেশে থাইরয়েড এখন এক নীরব স্বাস্থ্যঝুঁকি হিসেবে দেখা দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সচেতনতা, সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা—এই তিনটি বিষয় মেনে চললেই এই রোগ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।