পড়াশোনা, অফিসের কাজ, ফেসবুক ক্যাপশন লেখা কিংবা গবেষণাপত্র তৈরি—প্রায় সব ক্ষেত্রেই এখন চ্যাটজিপিটি আমাদের নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠেছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক এই চ্যাটবট এখন শুধু প্রশ্নের উত্তরই দেয় না, বরং তথ্য অনুসন্ধান, বিশ্লেষণ ও কনটেন্ট তৈরিতেও সহায়ক ভূমিকা রাখছে। এতে জীবনযাপন যেমন সহজ হয়েছে, তেমনি বেড়েছে কিছু ঝুঁকিও। কারণ আধুনিক যুগে “তথ্য” হলো সবচেয়ে বড় সম্পদ—আর এই তথ্য ভুল হাতে গেলে হতে পারে ভয়াবহ ক্ষতি।
তাই জেনে নেওয়া জরুরি, কোন কোন তথ্য চ্যাটজিপিটির মতো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করা ঠিক নয়।
১. ব্যক্তিগত শনাক্তকরণ তথ্য
ব্যক্তিগত শনাক্তকরণ তথ্য (Personally Identifiable Information – PII) যেমন—পুরো নাম, জন্মতারিখ, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, বাসার ঠিকানা, ফোন নম্বর বা ইমেইল ঠিকানা—এসব তথ্য শেয়ার করলে পরিচয় চুরির মতো ঘটনা ঘটতে পারে। যদিও চ্যাটজিপিটি স্বেচ্ছায় এসব তথ্য সংরক্ষণ করে না, তবুও তথ্য ফাঁস বা নিরাপত্তা ঝুঁকির আশঙ্কা থেকেই যায়।
২. ব্যাংকিং ও আর্থিক তথ্য
ক্রেডিট/ডেবিট কার্ডের নম্বর, ব্যাংক হিসাবের বিবরণ বা মোবাইল ব্যাংকিং সংক্রান্ত তথ্য কখনোই চ্যাটজিপিটির মতো প্ল্যাটফর্মে দেওয়া উচিত নয়। এসব তথ্য ফাঁস হয়ে গেলে সাইবার অপরাধীরা সহজেই আপনার অর্থ চুরি করতে পারে।
৩. পাসওয়ার্ড বা লগইন তথ্য
চ্যাটবটকে নিজের পাসওয়ার্ড জানানো মানেই নিজেই নিজের ডিজিটাল নিরাপত্তা ভাঙা। এটি হ্যাক বা ফিশিংয়ের মাধ্যমে আপনার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টগুলো ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে। তাই সব অ্যাকাউন্টে আলাদা, জটিল পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন এবং সম্ভব হলে টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু রাখুন।
৪. গোপন বা ব্যক্তিগত তথ্য
চ্যাটজিপিটির মতো এআই চ্যাটবট প্রেক্ষাপট বা আবেগ বুঝতে পারে না। তাই সংবেদনশীল বা গোপন কোনো তথ্য এতে ব্যবহার করলে অনিচ্ছাকৃতভাবে তা ফাঁস হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়। এটি আপনার পেশাগত বা ব্যক্তিজীবনে বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে।
৫. বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি বা মেধাসম্পদ
উদ্ভাবনী ব্যবসায়িক পরিকল্পনা, কোড, ডিজাইন, আর্টওয়ার্ক কিংবা গবেষণালব্ধ তথ্য—এসব মেধাসম্পদ চ্যাটবটের মাধ্যমে শেয়ার করলে তা ভবিষ্যতে ডেটা হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে, এমনকি অন্য ব্যবহারকারীর কাছেও পৌঁছে যেতে পারে। স্বত্বাধিকার সংরক্ষণে এসব তথ্য গোপন রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ।