দিন শুরু হয় এক কাপ চায়ে এক চামচ চিনি দিয়ে, এরপর নাশতার সঙ্গে জুস, দুপুরে মিষ্টি দই, বিকেলে বিস্কুট, আর রাতে ঠান্ডা পানীয়— এভাবে অজান্তেই প্রতিদিন শরীরে জমে যাচ্ছে বাড়তি চিনি। অথচ অতিরিক্ত চিনি শরীরে ডেকে আনে নানারকম স্বাস্থ্যঝুঁকি। হঠাৎ ওজন বেড়ে যাওয়া, ডায়াবেটিস, দাঁতের ক্ষয় কিংবা হৃদরোগ— সবকিছুর সঙ্গে গভীর সম্পর্ক রয়েছে অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার। কিন্তু প্রশ্ন হলো, দিনে কতটুকু চিনি খাওয়া নিরাপদ?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) নির্দেশনা
WHO অনুযায়ী, একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক মোট ক্যালরির ৫-১০ শতাংশের বেশি চিনি থেকে আসা উচিত নয়। সহজভাবে বললে—
পুরুষদের জন্য দিনে সর্বোচ্চ ৯ চা-চামচ
মহিলাদের জন্য দিনে সর্বোচ্চ ৬ চা-চামচ
গড়ে দিনে প্রায় ৬ চা-চামচ বা ২৫ গ্রাম চিনি নিরাপদ ধরা হয়। তবে ১২ চামচ (৫০ গ্রাম) এর বেশি হলে শরীরে ক্ষতির প্রভাব দেখা দিতে শুরু করে।
অতিরিক্ত চিনির ঝুঁকি
ওজন ও স্থূলতা: শরীরে চিনি ফ্যাটে রূপ নেয়, বিশেষ করে কোমর ও পেটে মেদ জমায়।
ডায়াবেটিস: রক্তে শর্করা বাড়ায়, ইনসুলিনের কার্যকারিতা ব্যাহত করে।
হৃদরোগ: ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বাড়িয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি দ্বিগুণ করে।
দাঁতের ক্ষয়: দাঁতে ক্যাভিটি ও সংক্রমণের ঝুঁকি তৈরি করে।
ত্বক ও শক্তি: কোলাজেন ভেঙে অকাল বলিরেখা আনে, শরীরকে দুর্বল ও ক্লান্ত করে।
দৈনন্দিন খাবারে কতটা চিনি থাকে?
চা বা কফি: প্রতিদিন ২ কাপেই প্রায় ২ চা-চামচ চিনি খাওয়া হয়ে যায়।
জুস বা সফট ড্রিঙ্ক: এক গ্লাসে থাকতে পারে ৪–৫ চামচ চিনি।
বিস্কুট, কেক, মিষ্টি: কয়েক টুকরো খেলেই শরীরে ঢুকে যায় আরও ৩–৪ চামচ চিনি।
সীমারেখা মানলেই সুস্থ থাকা সম্ভব
মিষ্টি খেলে মন ভালো হয়, এতে সন্দেহ নেই। কিন্তু সীমা অতিক্রম করলে সেই মিষ্টিই শরীরের জন্য বিষ হয়ে ওঠে। তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো— চায়ের কাপে চিনি ঢালার আগে মনে রাখুন, সারাদিনে ৬ চা-চামচের বেশি নয়। এ নিয়ম মেনে চললেই দীর্ঘদিন সুস্থ ও ফিট থাকা সম্ভব।