ক্যানসার—একটি শব্দ, যেটা অনেকের মনেই ভয় জাগায়। এক সময় ক্যানসার মানেই ছিল মৃত্যু। কিন্তু আজকের দিনে চিকিৎসাবিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতির কারণে এই ধারণা অনেকটাই বদলে গেছে। এখন কিছু ক্যানসার আছে, যেগুলো সময়মতো ধরা পড়লে চিকিৎসার মাধ্যমে পুরোপুরি সুস্থ হওয়া সম্ভব। এজন্য প্রয়োজন শুধু সচেতনতা ও নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা। ভয়ের বদলে সচেতনতা হলো ক্যানসারের বিরুদ্ধে সবচেয়ে কার্যকর অস্ত্র।
তো, ক্যানসার আসলে কী?
ক্যানসার হলো শরীরের কোনো কোষের অস্বাভাবিক ও অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধির ফলে তৈরি হওয়া একটি রোগ। এটি শরীরের যেকোনো অঙ্গে হতে পারে এবং ধীরে ধীরে অন্যান্য অংশেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। তবে এমন কিছু ক্যানসার রয়েছে, যেগুলো প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে চিকিৎসা সহজ এবং নিরাময়ও সম্ভব।
চলুন জেনে নিই এমন পাঁচটি ক্যানসার সম্পর্কে—
স্তন ক্যানসার
নারীদের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ ক্যানসার এটি। প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত হলে নিরাময়ের হার ৯৯%। নিয়মিত ম্যামোগ্রাম ও স্বপরীক্ষার মাধ্যমে এটি সহজে ধরা যায়।প্রোস্টেট ক্যানসার
পুরুষদের মধ্যে প্রচলিত এই ক্যানসারটি ধীরে বৃদ্ধি পায়। শুরুতেই ধরা পড়লে নিরাময়ের সম্ভাবনা প্রায় ৯৯%।থাইরয়েড ক্যানসার
গলার নিচে অবস্থিত থাইরয়েড গ্রন্থিতে এই ক্যানসার দেখা যায়। এটি ধীরে ধীরে বাড়ে এবং প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে নিরাময়ের হার প্রায় ৯৮%।টেস্টিকুলার ক্যানসার
পুরুষদের অণ্ডকোষে এই ক্যানসার হয়। এটি তুলনামূলকভাবে কম দেখা যায়, তবে প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে প্রায় ৯৯% ক্ষেত্রেই নিরাময়যোগ্য।মেলানোমা (ত্বকের ক্যানসার)
ত্বকে ঘটে যাওয়া এই ক্যানসার সাধারণত সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে নিরাময়ের হার প্রায় ৯৯%।
কেন এই ক্যানসারগুলো নিরাময়যোগ্য?
প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা যায়: নিয়মিত স্ক্রিনিং ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা এই ক্যানসারগুলো সহজে শনাক্ত করতে সাহায্য করে।
ছড়াতে সময় লাগে: এই ধরনের ক্যানসারগুলো ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়, ফলে চিকিৎসার জন্য সময় পাওয়া যায়।
আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতির সুবিধা: অস্ত্রোপচার, কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপির মতো আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে নিরাময় সম্ভব হচ্ছে।
সব মিলিয়ে বলা যায়, সময়মতো ধরা পড়লে কিছু ক্যানসার আর প্রাণঘাতী নয়। সচেতনতা, স্বাস্থ্যপরীক্ষা ও দ্রুত চিকিৎসার মাধ্যমেই জীবন বাঁচানো সম্ভব।