সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আজকাল আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বন্ধু-পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ, খবর জানা, ব্যবসা পরিচালনা কিংবা নিজের চিন্তাভাবনা শেয়ার—সবকিছুতেই সোশ্যাল মিডিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে এই ডিজিটাল উপস্থিতি যত বাড়ছে, হ্যাকারদের ততই আগ্রহ বাড়ছে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করতে। তাই সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্ট নিরাপদ রাখতে হলে সচেতনতা জরুরি।
হ্যাকড অ্যাকাউন্ট চেনার লক্ষণ
আপনার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছে কি না, তা বোঝার কিছু সাধারণ লক্ষণ রয়েছে:
অপরিচিত লগইন কার্যকলাপ: আপনি যেসব ডিভাইস বা লোকেশন থেকে লগইন করেন না, সেসব স্থান থেকে লগইনের তথ্য দেখা গেলে সতর্ক হন।
আপনার অনুমতি ছাড়া পোস্ট বা মেসেজ: টাইমলাইনে অজানা পোস্ট, বন্ধুদের কাছে স্প্যাম মেসেজ—এসব আপনার অজান্তে হলে হ্যাকের সম্ভাবনা প্রবল।
পাসওয়ার্ড পরিবর্তন: আপনি পাসওয়ার্ড বদলাননি অথচ লগইন করতে পারছেন না বা রিসেট করতে সমস্যা হচ্ছে—এটিও হ্যাকিংয়ের ইঙ্গিত।
প্রোফাইল তথ্য পরিবর্তন: নাম, ছবি, বায়ো ইত্যাদি আপনার অজান্তে পরিবর্তন হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিন।
অদ্ভুত ইমেইল বা নোটিফিকেশন: লগইন বা পাসওয়ার্ড পরিবর্তন সংক্রান্ত ইমেইল, যা আপনি শুরু করেননি।
বন্ধুদের অভিযোগ: আপনার পক্ষ থেকে অদ্ভুত বার্তা বা লিংক পেলে বন্ধুরা আপনাকে জানালে গুরুত্ব দিন।
হ্যাক হলে কী করবেন?
হ্যাক হওয়ার পর আতঙ্কিত না হয়ে নিচের পদক্ষেপগুলো দ্রুত গ্রহণ করুন:
পাসওয়ার্ড রিসেট করুন: যদি এখনো লগইন করা সম্ভব হয়, তাহলে দ্রুত পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করুন। শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন—যাতে বড় হাতের, ছোট হাতের অক্ষর, সংখ্যা ও বিশেষ চিহ্ন থাকে।
বন্ধুদের সতর্ক করুন: আপনার অ্যাকাউন্ট থেকে কোনো স্প্যাম মেসেজ পেলে ক্লিক না করতে বন্ধুদের বলুন।
সোশ্যাল মিডিয়া সাপোর্ট টিমে রিপোর্ট করুন: ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম বা টুইটারের রিপোর্ট সিস্টেম ব্যবহার করে হ্যাকড অ্যাকাউন্ট পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া অনুসরণ করুন।
আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তা নিন: যদি হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে আর্থিক ক্ষতি বা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ঘটে, তাহলে সাইবার ক্রাইম বিভাগে অভিযোগ জানান।
নিরাপদে থাকার কিছু পরামর্শ
নিয়মিত পাসওয়ার্ড বদলান।
দুই স্তরের ভেরিফিকেশন চালু করুন।
সন্দেহজনক লিংকে ক্লিক না করুন।
কোনো অ্যাপে বা ওয়েবসাইটে লগইনের সময় যাচাই করে নিন সেটি আসল কি না।
সোশ্যাল মিডিয়ার সুবিধাগুলো উপভোগ করতে হলে নিরাপত্তার দিকেও সমান গুরুত্ব দিতে হবে। একটু সচেতন হলেই আপনি এবং আপনার প্রিয়জনেরা থেকে যেতে পারেন ডিজিটাল বিপদ থেকে নিরাপদ।