গরম ভাতের সঙ্গে ঘি বা ডাল আর পাশে এক-দুটি কাঁচামরিচ— এ এক চিরচেনা ঘরোয়া স্বাদ। শুধু ঝালপ্রেমীরাই নয়, অনেকেই নিয়মিত ভাতের সঙ্গে কাঁচা মরিচ খান। কারও কাছে এটি খাবারের স্বাদ বাড়ায়, কারও মতে রুচি বৃদ্ধি করে। তবে প্রশ্ন হলো— ভাতের সঙ্গে কাঁচামরিচ খাওয়া কি সত্যিই শরীরের জন্য উপকারী, নাকি কোনো ঝুঁকিও তৈরি করে? এ বিষয়ে মত দিয়েছেন পুষ্টিবিদ শরীফা আক্তার শাম্মী ও চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান।
কাঁচামরিচ ছোট হলেও ভরপুর পুষ্টির উৎস। এতে রয়েছে ভিটামিন এ, সি, কে, বি৬ ও ফলেট, পাশাপাশি আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, কপার, ম্যাঙ্গানিজের মতো খনিজ উপাদান। এছাড়া আছে ডায়াটারি ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ক্যাপসাইকিন, যা মরিচের ঝালের আসল উৎস।
কাঁচামরিচ খাওয়ার বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে। এটি হজমশক্তি বাড়ায়, কারণ ফাইবার ও ক্যাপসাইকিন লালা উৎপাদন বাড়িয়ে হজমে সহায়তা করে। ভিটামিন সি ও বিটা ক্যারোটিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং ঠান্ডা-কাশির মতো সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়তা করে। ক্যাপসাইকিন মেটাবলিজম বাড়িয়ে চর্বি গলাতে সাহায্য করে, ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণেও উপকারী হতে পারে। এছাড়া এটি খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে হৃদ্রোগের ঝুঁকি হ্রাস করে এবং ঠান্ডা বা সর্দি হলে সাইনাস পরিষ্কার করে স্বস্তি দেয়।
ডা. আতিকুর রহমানের মতে, প্রতিদিন এক বা দুটি কাঁচামরিচ খাওয়া শরীরের জন্য উপকারী। রান্না করলে কিছু পুষ্টি নষ্ট হয়, তাই কাঁচা অবস্থায় খেলে বেশি উপকার মেলে। তবে তিনি সতর্ক করেছেন— উপকারী বলেই বেশি খাওয়া উচিত নয়। অতিরিক্ত ঝাল খেলে খাদ্যনালিতে জ্বালা বা গ্যাস্ট্রিক সমস্যা হতে পারে। যাদের আগে থেকেই আলসার বা অ্যাসিডিটির সমস্যা আছে, তাদের বিশেষভাবে সাবধানে খেতে হবে।
তাহলে, ভাতের সঙ্গে কাঁচামরিচ খাবেন কি? উত্তর হলো— হ্যাঁ, দিনে ১-২টি কাঁচামরিচ খাওয়া যেতে পারে, যদি ঝাল সহ্য করা যায়। এটি রুচি বাড়ায়, খাবারের স্বাদ বাড়ায় এবং স্বাস্থ্য উপকারও দেয়। তবে অতিরিক্ত খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত এবং হজমজনিত সমস্যায় ভোগা থাকলে চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ মেনে চলা ভালো।